‘আনফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’
৪ এপ্রিল ২০১৬‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি'-র বিজ্ঞাপনে ধীরে ধীরে ফর্সা হওয়ার উপায়টা দেখানো হতো৷ ফর্সা হলে নাকি জীবন বদলে যায়৷ কালো, আত্মবিশ্বাসহীন মেয়েরা নাকি ফর্সা হলেই রাতারাতি আত্মবিশ্বাসী, আত্মনির্ভরশীল হয়ে যায়৷ এ কথা আপনি বিশ্বাস করেন?
আপনার উত্তর যা-ই হোক না কেন, ‘ফেয়ার', অর্থাৎ ফর্সা হলে তবেই ‘লাভলি' হওয়া যায়, এমন ‘মিথ' কিন্তু ভাঙতে শুরু করেছে৷ হ্যাঁ, গায়ের রং ফর্সা হলে কদর বেশি – মানুষের এমন ধারণাকে বদলে দিতে নতুন এক প্রচারণা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে৷ ফর্সা নয়, গায়ের কালো রংকে উদযাপন করতেই নতুন এই সামাজিক প্রচারণা, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘আনফেয়ার অ্যান্ড লাভলি'৷
গত ডিসেম্বরে এই প্রচারণা বা ক্যাম্পেইনটি শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস ও অস্টিনের তিন শিক্ষার্থী – প্যাক্স জোনস আর তাঁর দুই বন্ধু মিরুশা ও ইয়ানুশার৷ মিরুশা ও ইয়ানুশা দুই বোন, আদতে তামিল বংশোদ্ভূত৷ প্যাক্সের কথায়, ‘‘শুধু গায়ের রঙের কারণে আমাদের জীবনধারা কতটা ভিন্ন হয়ে যায় – সেই বিষয়টার প্রতি-ই আমরা মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি৷''
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, যেমন টুইটার ও ফেসবুকে হ্যাশট্যাগ ‘আনফেয়ার অ্যান্ড লাভলি' লিখে গায়ের রংজনিত বৈষম্যের বিরুদ্ধে এমন ভিন্নধর্মী প্রচারণার প্রতি ইতিমধ্যেই সমর্থন জানিয়েছেন, জানাচ্ছেন অগুন্তি মানুষ৷ কেউ আবার নিজের ছবি তুলে পোস্ট করছেন ইনস্টাগ্রামেও৷ এদের মধ্যে নন্দিতা দাসের মতো বহু বিখ্যাত মানুষও রয়েছেন৷
২০১৩ সালে ‘ডার্ক ইজ বিউটিফুল' বা ‘কালোই সুন্দর' প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় অভিনেত্রী নন্দিতা দাসের কথায়, ‘‘প্রাচীন কাল থেকে এভাবেই শ্রেণিভেদে কালো-সাদার বৈষম্য চলে আসছে৷ ধনীরা বাড়ির ভেতর থাকবে, সূর্যের আলো গায়ে মাখবে না, তাই তাঁদের রং হবে ফর্সা৷ আর যাঁরা গরিব, মাঠে-ঘাটে কাজ করেন, সারা দিন রোদে পোড়েন, তাঁদের রং হয় কালো – এভাবেই৷''
এরপররই অবশ্য বাজারে ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’-র মতো পণ্যের ছড়াছড়ি৷ আর তাই ‘আনফেয়ার অ্যান্ড লাভলি'-র মতো প্রচারণার একটা সামাজিক গুরুত্ব আছে বৈকি!
ডিজি/এসিবি