আফগানিস্তান ছাড়লেন মার্কিন জেনারেল
১৩ জুলাই ২০২১২০১৮ সাল থেকে আফগানিস্তানে মার্কিন রণনীতি পরিচালনের দায়িত্বে ছিলেন জেনারেল অস্টিন স্কট মিলার। সোমবার কাবুলের ন্যাটো দফতরে আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করলেন তিনি। সোমবার বিকেলেই দেশের বিমানে উঠেছেন তিনি। ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত আফগানিস্তানের দায়িত্ব সামলাবেন মেরিন জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেনজি। তবে তিনি আফগানিস্তানে যাবেন না। ফ্লোরিডার সদর দফতর থেকেই কাজ চালাবেন।
২০০১ সালে অ্যামেরিকা আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করার পর এই প্রথম আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাকে কম্যান্ড দেয়ার জন্য কোনো জেনারেল থাকছেন না। চার স্টার পদমর্যাদার অস্টিন দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন চার স্টার পদমর্যাদার জেনারেল ফ্র্যাঙ্কের হাতে। ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত মার্কিন সেনা যাতে সুষ্ঠু ভাবে দেশের বিমান ধরতে পারে, তা দেখাই ফ্র্যাঙ্কের প্রধান দায়িত্ব। এছাড়া মার্কিন সেনাঘাঁটি রক্ষা করা, প্রয়োজনে তালেবানের বিরুদ্ধে এয়ারস্ট্রাইক চালানো এবং কাবুল বিমানবন্দর রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে নতুন জেনারেলকে। আফগানিস্তানে অবস্থিত সমস্ত মার্কিন কূটনীতিককেও রক্ষা করতে হবে। ৩১ অগাস্টের মধ্যে সকলেই দেশে ফিরে যাবেন। তারপর আর আফগানিস্তান নিয়ে ফ্র্যাঙ্কের কোনো দায়িত্ব থাকবে না।
তালেবানের অবস্থান
অস্টিন মিলার চলে যাওয়া স্বাভাবিক ভাবেই তালেবানদের জন্য ভালো খবর। গত কয়েকমাস ধরে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করেছে তালেবান। বস্তুত, মার্কিন হিসেব অনুযায়ী, দেশের এক-তৃতীয়াংশ এখন তালেবানদের দখলে। শুধু তাই নয়, প্রায় প্রতিটি আঞ্চলিক রাজধানী ঘিরে ফেলেছে তারা। দখল করা কেবল সময়ের অপেক্ষা। কান্দাহারেও প্রায় ঢুকে পড়েছে তারা।
মার্কিন কূটনীতিকদের বক্তব্য, ইরান, উজবেকিস্তান এবং তাজিকিস্তানের সীমান্ত এখন তালেবানের দখলে। সে কারণেই কাবুল বিমানবন্দর তালেবানমুক্ত রাখা সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করছে অ্যামেরিকা। বিমানবন্দর দখল হয়ে গেলে সেনা দেশে ফিরতে পারবে না।
মার্কিন সাহায্যপুষ্ট আফগান সেনা তালেবানের সামনে কার্যত ভেঙে পড়েছে। অধিকাংশ অঞ্চলেই তারা কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না। বহু সেনা জওয়ান যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন সেনা দেশ ছাড়লেই তালেবান গোটা দেশ কব্জা করবে বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও এখনো পর্যন্ত নিজেদের শক্তিশালী অঞ্চলগুলিই তালেবান দখল করেছে। অন্য জনজাতি বা গোষ্ঠীার অঞ্চলে এখনো সে ভাবে তারা ঢুকতে পারেনি বলে আফগানিস্তানের কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। অ্যামেরিকা দেশ ছাড়লে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনাও তাই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)