আফগানিস্তান নিয়ে জাতিসংঘে সরব ভারত
১৬ আগস্ট ২০২১কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখল করে নিয়েছে তালেবান। পালিয়ে গেছেন দেশের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এই অবস্থায় সে দেশে তালেবানের হাতে নতুন সরকার গঠন এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। সোমবার পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক হওয়ার কথা। সূত্র জানাচ্ছে, তার আগেই ভারত জাতিসংঘে নিজেদের অবস্থান খানিকটা স্পষ্ট করে দিয়েছে। ভারত জানিয়েছে, তালেবান সরকার গড়লে ভারত তাকে স্বীকৃতি দিয়ে চায় না। বস্তুত, নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে থাকা ১৯৩টি দেশের মধ্যে অনেকেই ভারতের এই অবস্থান সমর্থন করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, সোমবার থেকে জয়শঙ্করের মার্কিন সফর শুরু হচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদে দুইটি আলোচনাসভায় তার নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। যার একটি ১৮ তারিখ এবং অন্যটি ১৯ তারিখ। ১৮ অগাস্টের সভা সন্ত্রাসবাদ এবং শান্তি প্রকল্প নিয়ে হওয়ার কথা। সন্ত্রাসবাদ কীভাবে আন্তর্জাতিক শান্তি বিঘ্নিত করছে তা নিয়ে দ্বিতীয় সভা হওয়ার কথা।
কূটনীতিকদের বক্তব্য, দুইটি সভাতেই তালেবান প্রসঙ্গ সামনে আসবে। সেখানে আন্তর্জাতিক কূটনীতি কীভাবে তালেবান সরকারের বিষয়টিকে দেখবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
প্রথম থেকেই তালেবান নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। আফগানিস্তানে তালেবান সরকার তৈরি হলে তার প্রভাব ভারতীয় উপমহাদেশ অঞ্চলে কীভাবে পড়বে, ভারত বরাবরই তা নিয়ে চিন্তিত। এর আগে আফগানিস্তানে তালেবান যখন সরকার গঠন করেছে, ভারত তা সমর্থন করেনি। বস্তুত, বিশ্বের বহু দেশই তা সমর্থন করেনি। কিন্তু বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কোন দেশ কী অবস্থান নেয়, এবারের জাতিসংঘের বৈঠকে তা অনেকটাই স্পষ্ট হবে।
দুইটি বৈঠকের বাইরে একাধিক দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তালেবান নিয়ে বৈঠক হতে পারে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। কূটনীতিকদের বক্তব্য, আশরফ গনির আফগান প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। ভারত সে দেশে বহু অর্থ বিনিয়োগ করেছে। আফগান সেনার উন্নয়নেও ভারত বহু বিনিয়োগ করেছে। গনির আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক সকলেরই জানা। এর আগে হামিদ কারজাইয়ের আমলেও ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের সুসম্পর্ক ছিল।
সূত্র জানাচ্ছে, তালেবান কাবুল দখল করার পর গনি সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ভারতে পালিয়ে এসেছেন বা আসার চেষ্টা করছেন। ভিসার তালিকায় আরো বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম আছে বলে জানা গেছে। ভারতে ইতিমধ্যেই চলে এসেছেন ওয়াহিদুল্লাহ কলিমজাই, আব্দুল আজিজ হাকিমি, আব্দুল কাদির জাজাই, মালেম লালা গুল, জামিল কারজাই, শুকরিয়া এসাখেইল প্রমুখ। এর মধ্যে অনেকে গনির প্রশাসনে মন্ত্রী ছিলেন।
কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে জয়শঙ্করের অ্যামেরিকা সফর নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের বৈঠকের পর আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের অবস্থান আরো স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে তার আগেই আফগানিস্তান থেকে ভারত সমস্ত কূটনীতিক এবং দূতাবাস কর্মীদের ফিরিয়ে নেবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, পিটিআই)