1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফ্রিকা সফরে জার্মান চ্যান্সেলর

১৩ জুলাই ২০১১

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল মঙ্গলবার আফ্রিকার দেশ কেনিয়া, আঙ্গোলা আর নাইজেরিয়া সফর করছেন৷ জার্মানির শিল্প মহল আফ্রিকায় বিনিয়োগে আগ্রহী৷

https://p.dw.com/p/11thJ
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট মোয়াই কিবাকি'র সঙ্গে ম্যার্কেলছবি: dapd

শিল্প ও অর্থনীতি মহলের এক প্রতিনিধি দল ম্যার্কেলের সঙ্গী৷ আফ্রিকার রয়েছে কাঁচামালের বিপুল ভাণ্ডার৷ আর সেই ভাণ্ডারে জার্মান শিল্প উদ্যোক্তারা তাদের উঁচু প্রযুক্তি মান নিয়ে প্রবেশাধিকার পেতে চায়৷ ম্যার্কেলের সফরকে ঘিরে তাই জেগেছে প্রত্যাশা৷

আফ্রিকা সফরের প্রথমেই চ্যান্সেলর ম্যার্কেল নাইরোবিতে প্রেসিডেন্ট মোয়াই কিবাকি'র সঙ্গে বৈঠকের পর জার্মানি আর কেনিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন৷ তবে এর জন্য চাই জার্মান উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ৷ এবং তার জন্য প্রয়োজন নিরাপদ, সুনির্দিষ্ট শর্তের একটি কাঠামো৷ এই কাঠামো তৈরি করতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হবে৷ সেকথাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি ম্যার্কেল৷ বলেন, কেনিয়াকে একটি দুর্নীতি দমন আইন গ্রহণ করতে হবে৷ নাইরোবিতে জার্মান শিল্প ও অর্থনীতির একটি প্রতিনিধি দপ্তর খোলার ব্যাপারে চুক্তি সই করেছে দুই পক্ষ৷

NO FLASH Deutschland Kenia Merkel
কেনিয়া সফরে ম্যার্কেলছবি: dapd

কেনিয়ার জন্য এক বড় সমস্যা হর্ন অফ আফ্রিকা অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কারণে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা৷ সোমালিয়ার সঙ্গে সীমান্তের অদূরে দাদাবে বিশ্বের বৃহত্তম শর্ণার্থী শিবির অবস্থিত৷ প্রেসিডেন্ট কিবাকি'র সঙ্গে বৈঠকে ম্যার্কেল এই শিবিরের শরণার্থীদের জন্য ১০ লক্ষ ইউরো সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন৷ এই শিবির প্রথমে গড়ে তোলা হয়েছিল ৯০ হাজার উদ্বাস্তুর জন্য৷ এখন সেখানে আশ্রয় নিয়ে আছে তিন লক্ষ আশি হাজার মানুষ৷ বেশির ভাগই সোমালিয়া থেকে আসা শরণার্থী৷ প্রতি সপ্তাহে যুক্ত হচ্ছে দশ হাজার নতুন মুখ৷

কেনিয়ায় জার্মান বিনিয়োগের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী রাইলা ওডিঙ্গা বিনিয়োগ বান্ধব এক পরিবেশের প্রতিশ্রুতি দেন৷ তবে তিনি একই সঙ্গে একথাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে, অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে চীন, অনেক আগে থেকেই কেনিয়ায় বিনিয়োগ করছে৷ সড়ক, রেল লাইন ও বিমান বন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে বেইজিং-এর ব্যাপক বিনিয়োগের সূত্র ধরে ওডিঙ্গা বলেন: ‘‘চীন সেই সব খাতে বিনিয়োগ করছে যেখান থেকে ইউরোপ নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে৷''

Flüchtlingslaager Dadaab
কেনিয়ায় দাদাব শরণার্থী শিবিরছবি: Picture-Alliance/dpa

প্রেসিডেন্ট কিবাকি এবং প্রধানমন্ত্রী ওডিঙ্গা - দুজনেই চ্যান্সেলর ম্যার্কেল'কে জানিয়ে দেন যে কেনিয়ায় জার্মান উদ্যোক্তাদের দিক থেকে সক্রিয় সংশ্লিষ্টতা তাঁদের কাম্য৷ তাঁরা কেনিয়ার পণ্যও জার্মানিতে রপ্তানি করতে আগ্রহী৷ কেনিয়ার লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনধারণের জন্য এটা জরুরি, বলেন তাঁরা৷

জার্মান সরকারের আফ্রিকা বিষয়ক প্রতিনিধি গ্যুন্টার নোকে আফ্রিকাকে জোরেশোরে অর্থনৈতিক সহযোগী হিসেবে গ্রহণ করার জন্য জার্মান অর্থনীতি মহলকে আহ্বান জানান৷ তিনিও চ্যান্সেলরের সফরসঙ্গী৷ তিনি স্বীকার করেন, অর্থনৈতিক বিনিয়োগের জন্য একটা আইনসিদ্ধ কাঠামো প্রয়োজন৷ তবে সে কাঠামো যদি না থাকে তাহলে ব্যবসার ব্যাপারটা অন্যদের হাতে ছেড়ে দিলে কোন লাভ হবেনা৷ নোকে বলেন: ‘‘ব্রাজিলীয়রা অথবা চীনারা যদি স্বচ্ছ নয়, এমন চুক্তি করে অথবা বিশেষ শর্তে আফ্রিকা থেকে স্বল্পমূল্যে কাঁচামাল নিয়ে আসে, যার কোন খবরই আমরা জানিনা, তাহলে জার্মান অর্থনীতির কোন লাভ হবেনা৷ জার্মান অর্থনীতির প্রতিযোগিতার ক্ষমতার জন্য তা সুফল আনবেনা৷''

জার্মানি নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু ও পরিবেশ সুরক্ষা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবসায় করতে বিশেষ আগ্রহী৷ তাছাড়া আফ্রিকায় কাঁচামাল সম্পদের ক্ষেত্রে অবাধ প্রবেশাধিকারও জার্মান শিল্প ও অর্থনীতি মহলের কাম্য৷ সফরকালে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবার অনুরোধ জানান তাঁরা চ্যান্সেলরকে৷ চীনা উদ্যোক্তারা আফ্রিকান সরকারদের সঙ্গে চুক্তি করে ‘রেয়ার আর্থ' নামে পরিচিত খনিজ পদার্থ আহরণের একচেটিয়া অধিকার পেয়েছে৷ জার্মান শিল্প ও বাণিজ্য সভার প্রধান সম্পাদক মার্টিন ভান্সলেবেন বলেছেন, এ ধরণের চুক্তির কারণে শুধু যে জার্মান অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়. আফ্রিকার দেশগুলোকেও চীনের উপর নির্ভরশীল করে তুলছে৷

প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য