কারাবন্দী শিশু
১৩ এপ্রিল ২০১২উনাথি জ্যাক যখন তার বাচ্চাকে প্রথমবারের মতো বাইরে নিয়ে আসে, তখন বাচ্চাটা ভয়েই অস্থির ছিল৷ কারণ বাচ্চাটির জন্ম হয়েছে কারাগারে এবং মায়ের সঙ্গে বাচ্চাও ছিল কারাবন্দী৷ কয়েক মাস পর প্রথমবারের মতো খোলা বাতাসে, খোলা আকাশের নীচে বাচ্চাকে নিয়ে বের হয় উনাথি জ্যাক৷
এখন বাচ্চাটির বয়স এক বছর৷ বেশ স্বাধীনভাবেই বাচ্চাটি কারাগারের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়৷ পল্সমুর কারাগারে দুর্ধর্ষ অপরাধীদের রাখা হয়৷ উনাথি জ্যাক পাঁচ বছরের জন্য দণ্ডিত৷ তার কাছে বেশ কিছু মাদক ছিল৷ সেই অবস্থায় পুলিশ তাকে আটক করে৷
ছেলে চিবুয়েজ'এর দিকে তাকিয়ে উনাথি বললো, ‘‘ও সব জায়গায় নিজের মতো করে ঘুরে বেড়ায়৷ একা একা সব জায়গায় যায়৷ যখন ও বাইরে থাকে, তখন ও কিছুতেই সেলে যেতে চায় না৷ ও সারাক্ষণই খোলা আকাশের নীচে থাকতে চায়৷''
তবে যে জায়গায় উনাথি তার বাচ্চা নিয়ে থাকে, সেখানে বাচ্চাদের খেলনা সহ কিছু বইও রাখা আছে৷ উনাথি'র সঙ্গে রয়েছে আরো তিন জন মহিলা৷ এরা সকলেই কারাগারে সন্তানের জন্ম দিয়েছে৷ তবে বাচ্চাসহ মায়েদের শুধুমাত্র কারাগারের এই বিশেষ জায়গাতেই আসতে দেয়া হয়৷
পল্সমুর কারাগারে ৩২৯ জন বন্দীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে৷ অথচ সেখানে এই মুহূর্তে রয়েছে প্রায় ৫১৮ জন বন্দী৷ সবার জন্য রয়েছে ছোট বাড়ির মতো কারাগার৷ কাঠের তৈরি শয়নকক্ষ৷ আর বাড়ির সদর দরজা দিনের বেলা সবসময়ই খোলা থাকে৷
বাচ্চাদের সঙ্গে সঙ্গে মায়েরাও ঘুরে বেড়ায়৷ বাচ্চারা কী খেতে চায়, তা অনুযায়ী তারা রান্নাও করে৷ কর্তৃপক্ষ জানায়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক বুঝতে পারে যে সে কারাবন্দী৷ কিন্তু বাচ্চাদের আমরা এই ধরণের কোনো অনুভূতি দিতে চাই না৷ আমরা আশা করছি, এই থেকে বাচ্চারা কিছুটা হলেও স্বাভাবিক জীবনযাপনের ছোঁয়া পাবে৷ তবে একই সঙ্গে তারা জানবে যে আইনের পরিপন্থী কোনো কাজ করলে সাজা সবার প্রাপ্য৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ