আবার দলাই লামা’কে নিয়ে চীন-মার্কিন টানাপোড়েন
১৭ জুলাই ২০১১হোয়াইট হাউসের ম্যাপ রুমে সাক্ষাৎ৷ ওবামা মনোযোগ দিয়ে শোনেন তিব্বতিদের ধর্মগুরুর কথা৷ ৪৪ মিনিটব্যাপী আলাপ-আলোচনায় ওবামা ব্যক্ত করেন তিব্বতে মানবাধিকারের প্রতি তাঁর ‘‘জোরদার সমর্থন'' - এবং সেই সঙ্গে তাঁর ‘‘আন্তরিক উদ্বেগ''৷ পরে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে ওবামার অবস্থান আরো স্পষ্ট করে দেওয়া হয়: ‘এই সাক্ষাৎ পুনরায় তিব্বতের অন্যান্য ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত সত্তার প্রতি প্রেসিডেন্টের জোরদার সমর্থন ব্যক্ত করছে৷'
ওয়াশিংটনে ওবামা-দলাই লামা সাক্ষাতের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেইজিং মার্কিন শার্জ দ্য'ফেয়ার'কে ডেকে পাঠিয়ে ‘‘তীব্র উষ্মা'' প্রকাশ করে৷ বেইজিং'এর তরফ থেকে বলা হয়, ওয়াশিংটনের এই সাক্ষাৎ চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ‘‘স্থূল হস্তক্ষেপের'' সমতুল এবং এর ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ বেইজিং'এর পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মা ঝাওসু'র বিবৃতি: ‘‘আমাদের দাবি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের অবস্থান আন্তরিকভাবে বিবেচনা করুক... চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করুক এবং যে সব চীন-বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি ‘তিব্বতের স্বাধীনতার' প্রয়াসী, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করা এবং তাদের সমর্থন করা বন্ধ করুক৷''
ওয়াশিংটন দৃশ্যত চীনের তরফে এ'ধরনের কড়া প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশাই করেছিল৷ তাই দলাই লামার হোয়াইট হাউসে আগমন ঘটে একটি সপ্তাহান্তে, ভবনটির ব্যক্তিগত অংশে তাঁর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়৷ কোনো রিপোর্টারকে সেই সাক্ষাতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ এমনকি দলাই লামা তাঁর ১১ দিন ব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র সফর সমাপ্ত করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই সাক্ষাতের কথা ঘোষণা করা হয়৷ পরে হোয়াইট হাউস সেই সাক্ষাতের একটি আলোকচিত্র প্রকাশ করে৷
দলাই লামা পরে বলেন, তিনি ওবামার সঙ্গে ‘‘মানুষ হিসেবে'' ঘনিষ্ঠতা বোধ করেন৷ ওবামার ক্ষেত্রেও বোধহয় তাই, কেননা প্রেসিডেন্টের দুই মেয়ে মালিয়া এবং সাশা সংক্ষিপ্তভাবে দলাই লামাকে দর্শন করার সুযোগ পায়৷ চীনের প্রতিক্রিয়ার প্রতি স্পর্শকাতরতার আর একটি নিদর্শন, হোয়াইট হাউস পরে স্পষ্ট করে দেয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দলাই লামা, উভয়েই তিব্বতকে চীনের অংশ হিসেবে মেনে নেন৷ এছাড়া ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওবামা দলাই লামা'কে অভ্যর্থনা জানান ঠিক এই ম্যাপ রুমেই৷ কাজেই কূটনৈতিক ‘কোরিওগ্রাফির' যে কোনো পরিবর্তন ঘটেছে, এমনও বলা চলে না৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়