1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুরস্কার পেল ‘রাকিব খান'

দেবারতি গুহ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩

ছোট্ট রাকিবের বাস বাংলাদেশের চাঁদপুরে৷ সংসারের তাগিদেই আয়ের একটা উপায় বার করতে হয়েছিল তাকে৷ কী ছিল সেই কাজ? কী ছিল তার স্বপ্ন? এ প্রশ্নের উত্তরই রুপালি পর্দায় তুলে ধরেছেন শাহীন দিল-রিয়াজ৷ জয় করেছেন একের পর এক পুরস্কার৷

https://p.dw.com/p/19pbI
Shaheen Dill-Riaz ist Filmemacher, Kameramann, Regisseur, Produzent und Autor. Er wurde 1969 in Dhaka, Bangladesch geboren. ***DW/Arafatul Islam schrieb: This is the official website of Filmmaker Shaheen Dill-Riaz. We took his interview and he sugested us to collect photos from his official websites Press section.***
রাকিব খান ছবির একটি দৃশ্যছবি: Shaheen Dill-Riaz

আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ‘ডক্সস!'-এর ‘গ্রোসে ক্লাপে' পুরস্কারের পর, এবার জার্মানির নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের ‘আইনে-ভেল্ট-ফিল্মপ্রাইজ' জয় করে নিল ‘রাকিব খান'৷ সম্প্রতি কোলোন শহরে একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পরিচালক শাহীন দিল-রিয়াজের হাতে দেড় হাজার ইউরো মূল্যের তৃতীয় পুরস্কারটি তুলে দিলেন মন্ত্রী ড. আঙ্গেলিকা শোয়াল-ড্যুরেন৷ বললেন, ‘‘বাংলাদেশের ছোট্ট একটা বন্দরনগরের গল্প এটি৷ রাকিব নামের এক কিশোর সেখানে একজন ‘প্রোজেকশনিস্ট'-এর কাজ কাজ করে সংসার চালানোর জন্য৷ তারপরও কিন্তু তার মনে কোনো দুঃখ নেই৷ বরং তার মেজাজ-মর্জি, পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক, ভাই-বোনের মধ্যকার বিরোধ – সবটাই আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই৷ এটা সত্যিই অভিভূত করার মতো৷''

[No title]

তবে পুরস্কার পাওয়া ছাড়াও আরো বড় একটা কাজ করতে পেরেছে ‘রাকিব খান'৷ পরিচালক শাহীন দিল-রিয়াজের নিজের কথায়, ‘‘আগামীতে শুধু জার্মানি নয়, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতেও স্কুলের পাঠক্রমের মধ্যে থাকবে ‘রাকিব খান'৷ ক্লাসরুমের মধ্যেই ব্যবহার করা হবে ছবিটা৷ বাচ্চারা ‘রাকিব খান' দেখবে, ছবিটা নিয়ে আলোচনা করবে, তার সম্পর্কে লিখবে৷ এটা আমার জন্য একটি নতুন প্রাপ্তি তো বটেই!''

রুপালি পর্দায় রাকিবের গল্প

১০ বছরের কিশোর রাকিব পেশায় প্রোজেকশনিস্ট৷ সহজ করে বললে, প্রেক্ষাগৃহে সিনেমার ফিল্ম বদলানোর কাজ করে সে৷ এই কাজ করে রাকিবের প্রতিদিনের আয় গড়ে ২০ বা ২৫ টাকা৷ এই টাকা সে দিয়ে দেয় মাকে, সংসার চালাতে৷ বাবা-মা আলাদা থাকেন৷ তাই মা আর বড় ভাইকে নিয়েই রাকিবের সংসার৷ কখনো ভাইয়ের সঙ্গে খুনসুটি, মায়ের সঙ্গে ঝগড়া৷ সিনেমা চালিয়ে দিয়ে কখনো নিজেও বা রুপালি পর্দার জগতে চলে যায় সে৷ এভাবেই চলে রাকিবের দিন৷

Shaheen Dill-Riaz. Quelle Foto: www.eisenfresser-film.de, Undatierte Aufnahme, Eingestellt 23.06.2009, Freigabe durch: Prof. Kathrin Lemme, Medienwirtschaft, Hochschule Ostwestfalen-Lippe - Fachbereich Medienproduktion, Liebigstraße 87, 32657 Lemgo
পরিচালক শাহীন দিল-রিয়াজছবি: Lemme Film GmbH

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ‘রাকিব খান' ছবিটির একটা অংশ প্রদর্শন করা হয়৷ রাকিবের আদুরে কণ্ঠ, তার মান-অভিমান, চাওয়া-পাওয়া স্পষ্টত স্পর্শ করে উপস্থিত ছোট-বড় সকল দর্শকদের৷ জার্মানির অন্যতম চলচ্চিত্র সমালোচক এবং সাংবাদিক ক্রিস্টিয়ানে গ্রেফে বললেন, ‘‘রাকিব খান ছবিটির সবচেয়ে বড় দিক হলো এখানে পরিচালক শাহীন দিল-রিয়াজ ছবির কোনো অংশের কোনো ব্যাখা দেননি৷ বাংলাদেশের একটা গরিব পরিবার এবং সেই পরিবারের স্বার্থে একটি শিশুকে কাজ করতে দেখিয়ে কোনোভাবেই কোনো সহমর্মিতা আশা করেননি তিনি৷ ছবিটির মধ্যে দিয়ে আমরা এমন একটি শিশুর গল্প জানতে পারি, যে সংসারের নানা সমস্যা সত্ত্বেও জার্মান বাচ্চাদের মতোই স্বপ্ন দেখে, জীবনে এগিয়ে যেতে চায়৷ তাকে দেখে তার প্রতি আমাদের কখনই করুণা হয় না, বরং তার প্রতি সম্মানে আমাদের মাথা নত হয়ে যায়৷''

[No title]

রাকিব খান এখন পড়াশোনা করছে

‘‘আমরা ছবির শুটিং-এর সময়েই লক্ষ্য করছিলাম যে, প্রোজেকশনিস্ট হিসেবে কাজ করার কারণে রাকিবের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছিল৷ কিন্তু সেই সময় তার উপার্জন করা অর্থের প্রয়োজন ছিল পরিবারে৷ তাই আমরা এই শর্তে ছবিটি শুরু করি যে, ছবি শেষ হলে আমরা একটা অনুদান দেব, যা দিয়ে সে দুই-তিন বছর তার পড়াশোনার খরচ চালাতে পারবে৷ আমি যতদূর জানি, রাকিব প্রোজেকশনিস্টের কাজ ছেড়ে দিয়েছে৷ সে পড়াশোনা করছে এবং পড়াশোনায় সে খুব ভালো হয়েছে৷ এখন খুব সম্ভবত সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে৷''

বলা বাহুল্য, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার জয় করেছেন শাহীন দিল-রিয়াজ৷ তাঁর নির্মিত ‘লোহাখোর', ‘কোরান সন্তান', ‘জীবন জলেবেলে'-র মতো তথ্যচিত্রগুলো জার্মানির বিভিন্ন টেলিভিশনেও প্রদর্শিত হয়েছে৷ বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি ছবি তৈরির পরিকল্পনা করছেন শাহীন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য