ভারত-পাকিস্তান শান্তি প্রক্রিয়া
১৭ জুলাই ২০১৩এই সংলাপ প্রক্রিয়াকে ‘ফাস্ট-ট্র্যাক'-এ আনতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ৷ ২০০৮ সালে মুম্বই সন্ত্রাসী হামলা এবং হালে ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের অস্ত্রবিরতি রেখায় এক ভারতীয় সেনার মুণ্ডচ্ছেদ করার ঘটনার পর থেকে দু'দেশের মধ্যে আস্থার ঘাটতি প্রকট হলে আলোচনা প্রক্রিয়া থেমে যায়৷
পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে এবং পরে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ভারতের সঙ্গে শান্তি সংলাপ আবার শুরু করার আগ্রহের কথা বলে এসেছেন৷ সেইমতো, ৬ই জুলাই তাঁর বিশেষ দূত হিসেবে নতুন দিল্লি আসেন শাহরিয়ার খান৷ প্রধানমন্ত্রীর ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে নওয়াজ শরিফের চিঠি দেন৷ পরে তিনি দেখা করেন পররাষ্ট্রসচিব জন মাথাই এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননের সঙ্গে৷ এ বিষয়ে ভারতের মনোভাব তাঁকে জানানো হয়৷ পাকিস্তানের দিক থেকে উপযুক্ত সাড়া পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে ভারত৷
অবশ্য তার আগেই আগামী সেপ্টেম্বর মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দু'দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারে৷ আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমান খুরশিদের সঙ্গেও কথা হয় নওয়াজ শরিফের এই বিশেষ দূতের৷ এতে শান্তি প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক গতি আসবে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতায় পড়বে ইতিবাচক প্রভাব, বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ আট-দফা সার্বিক শান্তি সংলাপের মধ্যে আছে সন্ত্রাস, জম্মু-কাশ্মীর, সিয়াচেন এবং অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক ইস্যু৷
ওদিকে, টি.সি.এ. রাঘবনকে নতুন হাইকমিশনার করে পাঠানো হয়েছে পাকিস্তানে৷ পাকিস্তানের নতুন রাজনৈতিক আবহে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে দু'দেশকে, সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন রোডম্যাপ তৈরি করাই হবে তাঁর প্রধান কাজ৷ নিতে হবে অনুকূল পরিবেশের জন্য আস্থা বাড়ানোর নতুন পদক্ষেপও৷ যেমন, ভারতকে সবথেকে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের মর্যাদা বা এমএফএন মর্যাদা দেয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা, ভিসা ব্যবস্থা শিথিল করা ইত্যাদি৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের আর্থিক প্রতিকূলতার প্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত করা যেমন জরুরি, তেমনি সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা ততটাই জরুরি ভারতের কাছে৷ বিদেশি কূটনীতিকদের আশঙ্কা, আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে আবার হয়ত উত্তপ্ত হতে পারে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক৷ সে বিষয়ে উভয় দেশকে থাকতে হবে সতর্ক, নাহলে আবারো ভেস্তে যেতে পারে শান্তি সংলাপ৷