1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আমরা বাকস্বাধীনতার পক্ষে’

২২ এপ্রিল ২০১৩

একদিকে বাক স্বাধীনতা রক্ষার দাবি, অন্যদিকে সহিংসতায় উস্কানির পেছনে ব্লগারদের দায়ী করার চেষ্টা৷ বাংলাদেশে এখন বাক স্বাধীনতার ধরন নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা৷ এই ইস্যুতে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন ফাহিম মাশরুর৷

https://p.dw.com/p/18KhT
ছবি: Fotolia/Radovanov

ডয়চে ভেলেকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলা মাইক্রোব্লগিং সাইট ‘বেশতো'-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর জানান, তিনি বাকস্বাধীনতার পক্ষে, তবে ফেসবুক, ব্লগ ব্যবহার করে কোনো ধরনের সহিংসতা বা উস্কানিকে সমর্থন করেন না তিনি৷

বাংলা ভাষার নতুন সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম ‘বেশতো' চালু হয়েছে কয়েকমাস আগে৷ ব্লগিংয়ের পাশাপাশি এটিতে ফোরামও রয়েছে৷ ডয়চে ভেলের বেস্ট অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড ‘দ্য বব্স' এর ‘সেরা সৃজনশীল এবং মৌলিক' বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে এই প্রকল্পটি৷

স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতিনিধি বেশতো

এই মনোনয়নের খবরে সন্তুষ্ট ফাহিম৷ বেশতো'কে যারা মনোনয়ন দিয়েছে, তাদেরকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি৷ ফাহিম বলেন, ‘‘আমাদের দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই ভালো কোনো সামাজিক যোগাযোগ সাইট এতদিন ছিল না৷ বাংলাদেশে ফেসবুক বা এরকম অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ সাইটের অনেক ব্যবহারকারী থাকলেও সেগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তৈরি হয়নি৷ ফলে একটা ঘাটতি ছিল৷''

সাক্ষাৎকারটি শুনতে ক্লিক করুন এখানে

ফাহিম মাশরুর এবং তাঁর দল এই ঘাটতির কথা বিবেচনা করেই তৈরি করছেনে বেশতো৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশের উপযোগী করে, আমাদের ভাষায় তৈরি করা হয়েছে বেশতো৷''

বাংলাদেশের সফটওয়্যার শিল্পের সংগঠন বেসিসের সভাপতি ফাহিম মাশরুর মনে করেন, ‘‘বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহার এখনও শহরকেন্দ্রিক থাকলেও ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশে৷ তখন বাংলা ভাষার নেটওয়ার্কের চাহিদা আরো বাড়বে৷ আর সেই চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে তাদের নতুন মাইক্রো ব্লগিং সাইট৷''

এখানে বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩২ লাখের মতো৷ ব্লগারের সংখ্যা লক্ষাধিক৷ ব্লগার এবং ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিয়ে এখন ব্যাপক আলোচনা চলছে৷ বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় চার ব্লগার কারাবন্দি রয়েছেন ‘ধর্ম অবমাননার' অভিযোগে৷

ফাহিম মাশরুরের সঙ্গে আলোচনায় এই বিষয়টিও উঠে আসে৷ বর্তমান সরকার যেভাবে ফেসবুক, ব্লগের উপর কড়াকড়ি আরোপের চেষ্টা করছেন, সেটা কি বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত নয়? এই প্রশ্ন রাখা হয় তাঁর কাছে৷ জবাবে ফাহিম বলেন, ‘‘নাগরিক হিসেবে আমরা কোনোভাবেই চাইনা বাকস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হোক৷ তবে এটাও ঠিক, ইন্টারনেট এখন একটি সামাজিক একটি ব্যাপার হয়ে গেছে৷ এজন্য এটার সংবেদনশীলতাও অনেক৷ তাই এক্ষেত্রে সরকারি বা ব্যবহারকারী পর্যায়ে সচেতনতা দরকার, যাতে ইন্টারনেটের অপব্যবহার না হয়৷''

প্রয়োজন সুস্পষ্ট নীতিমালা

বাংলাদেশের আইনগত কাঠামোতে ইন্টারনেটের বিষয়টি এখনো সুস্পষ্ট না, বলেন ফাহিম৷ তিনি মনে করেন, ‘‘ইন্টারনেট কন্টেন্টের ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে কোথাও বলা নেই৷ আমার মনে হয়, বর্তমান ব্যাপারগুলো বিবেচনায় এনে, সরকার ইন্টারনেটের ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে পারবে৷ এবং ইন্টারনেট নিরাপত্তা বা গোপনীয়তার বিষয়াদি রক্ষায় আইনি বিষয়াদিও ঠিক করতে পারবে, যেটা উন্নত দেশে হয়৷''

সামাজিক যোগাযোগ সাইট বেশতো'কে নিরাপদে রাখতে আপাতত নিজস্ব নীতিমালা এবং টিমের দিকেই গুরুত্ব দিলেন ফাহিম৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবহারকারীরা মুক্তভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারবে৷ আমাদের নীতিমালায় সেটা রয়েছে৷ তবে নীতিমালায় এটাও আছে, এখানে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত আক্রমণ বা কোনো ধরনের ধর্মীয় সংবেদনশীল ব্যাপারে আপত্তিকর মন্তব্য করা যাবে না৷''

ফাহিম বলেন, ‘‘একদিকে আমরা বাক স্বাধীনতার পক্ষে, অন্যদিকে এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যাতে কেউ কোনো ধরনের হিংসা, বিদ্বেষ বা সম্প্রদায়িকতা ছড়াতে না পারে, সে ব্যাপারেও আমরা সচেতন৷''

বেশতো'কে ভোট দিন

ডয়চে ভেলের সেরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড দ্য বব্স এর ‘সেরা সৃজনশীল এবং মৌলিক' বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে ‘বেশতো'৷ এখন চলছে প্রতিযোগিতার ভোটাভুটি৷ এই প্রতিযোগিতায় আরো ১৩টি ভাষার সঙ্গে লড়ছে বাংলা ভাষার এই নেটওয়ার্ক৷ তাই বিশ্বের অন্যান্য ভাষার প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চাইলে বেশতো'র দরকার অনেক ভোট৷ এই প্রকল্পকে ভোট দিতে ভিজিট করুন: www.thebobs.com/bengali ঠিকানা৷

উল্লেখ্য, বাংলা ভাষায় বেশতো'র মতো আঞ্চলিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তুলনামূলকভাবে নতুন৷ তবে রাশিয়া কিংবা চীনের মতো দেশে আগেই চালু হয়েছে এমন আঞ্চলিক ওয়েবসাইট৷ বেশতো বেশ দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে৷

সাক্ষাৎকার: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য