1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আমাদের চুপ থাকতে বলা হয়েছে'

২০ মার্চ ২০১৭

সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা৷ তনুর বাবা মনে করেন, বিশেষ এলাকায় এই খুন হওয়ায় বিচার পাওয়া যাবে না৷ তাই তাঁর কথায়, ‘‘আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি, তিনিই বিচার করবেন৷''

https://p.dw.com/p/2ZYeZ
ছবি: Twitter

ঠিক একবছর আগে, অর্থাৎ ২০১৬ সালের ২০ মার্চ, শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী তনুকে হত্যা করা হয় কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়৷ তনুর বাবা ক্যান্টমেন্টেই সিভিল চাকরি করেন৷ ঐ রাতে তাঁদের ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে ভিতরেই আরেকটি বাসায় ছাত্র পড়াতে গিয়েছিলেন তনু৷ পরে তাঁর লাশ পওয়া যায়৷

হত্যাকাণ্ডের পর থেকে চারবার তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল হলেও, তনু হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত বা আটক করতে পারেননি পুলিশ৷ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডি-র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ এখনো ‘মামলার তদন্ত চলছে' বললেও, কোনো অগ্রগতির খবর দিতে পারেননি৷ তনুর লাশের দু'দফা ময়না তদন্ত করেও কোনো ফল হয়নি৷ ডিএনএ টেস্টেও জড়িতদের কাউকে শনাক্ত করা যায়নি৷ তনুর পরিবারের পক্ষ থেকে সন্দেহভাজনদের নাম জানানো হয়েছিল তদন্তকারীদের৷ তাদের ধরার ব্যাপারেও পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি৷

তদন্ত কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘তদন্তে নতুন কোনো অগ্রগতি নেই৷ গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনীর মহড়া থাকায় প্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি৷ তবে তনুর মোবাইল ফোন, ব্যাগ, স্যান্ডেলসহ আরো কিছু জিনিসের ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তদন্ত এগিয়ে নেয়া যাবে বলে আশা করি৷''

Yar Hossain - MP3-Stereo

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সিআইডি আমাদের মামলার তদন্ত নিয়ে এখন আর কিছু জানায় না৷ কাউকে গ্রেপ্তার বা আটকও করেনি তারা৷ অথচ আমাদের চুপচাপ থাকতে বলা হয়েছে৷ বলা হয়েছে কথা না বলতে৷''

তাঁর কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় তনুকে হত্যা করা হয়েছে বলেই এর বিচার হবে না৷ যদি বাইরে হতো তাহলে বিচার পেতাম, আসামিরা ধরা পড়তো৷ আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি৷ তিনিই বিচার করবেন৷''

ইয়ার হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের চাপ দেয়া হচ্ছে৷ নানা ধরনের চাপের শিকার হচ্ছি আমরা৷ মুখ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে৷ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের চারিকটাও শেষ পর্যন্ত থাকবে কিনা জানি না৷ প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই আবেদন, আমরা বাঁচতে চাই, আমরা বিচার চাই৷''

তনুর বাবা বলেন, ‘‘গত একটি বছর আমার মেয়ে ছাড়া বেঁচে আছি৷ আশা ছিল বিচার পাবো৷ কিন্তু সে আশাও এখন আর নেই৷ আমার ভিতরে এখন শুধু আগুন জ্বলছে৷''

এদিকে তনু হত্যা মামলার তদন্তে এক বছরেও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় সিআইডিকে ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লা শাখা৷ আগামী ১০ দিনের মধ্যে সিআইডি যদি তদন্তে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে না পারে, তাহলে ২ এপ্রিল থেকে লাগাতার আন্দোলন গড়ে তুলবে তারা৷

সোমবার দুপুরে কুমিল্লা সিআইডিকে স্মারকলিপি দেয়ার পর, গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লা জেলার মুখপাত্র খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, ‘‘সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে লাগাতার আন্দোলনে নামবো৷ আমরা আশা করি, অচিরেই তনু হত্যাকারীদের শনাক্ত করে খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য