আমাদের দেশের জনগণ খুবই কাজের: জি এম কাদের
২৬ নভেম্বর ২০১২জার্মানি এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের চল্লিশ বছর চলছে এখন৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর জার্মানি সফর করেছেন৷ একইবছর বাংলাদেশ সফর করেন তৎকালীন জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ৷ এই দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কও ক্রমশ দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে৷
বাংলাদেশ থেকে এখন শুধু পোশাক নয়, জাহাজও রপ্তানি হচ্ছে জার্মানিতে৷ বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের সম্প্রতি জার্মানি ঘুরে গেলেন৷ বার্লিনে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘জার্মানির সঙ্গে আমাদের উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো৷ জার্মানির সঙ্গে আমাদের ‘ভলিউম অব বিজনেস' বাড়ছে৷''
জার্মানি তথা ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কের বর্তমান অগ্রগতি সম্পর্কে খানিকটা ধারণাও দিলেন জি এম কাদের৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি যেটা বুঝতে পারছি, ইউরোপের দেশগুলো এখন আর শুধু পণ্য রপ্তানি নয়, বরং ইউরোপের বাইরে কিছু উৎপাদন কারখানাও তৈরি করতে চাচ্ছে৷ ফলে তারা আমাদের মতো দেশগুলোর বাজার যাচাই করছে এবং বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে৷''
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ গত বছর ৫০ ভাগ বেড়েছে৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদেশে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ আরো বাড়াতে চাইলে বাংলাদেশের দরকার নিজস্ব ডিজাইনে ‘হাই-এন্ড প্রোডাক্ট' তৈরি করা৷ বাণিজ্যমন্ত্রী জানালেন, বাংলাদেশ এদিকেও অগ্রসর হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে আমরা অনেক বাজারে ‘হাই-এন্ড প্রোডাক্ট' পাঠাতে শুরু করেছি৷ আমি এখন সুনির্দিষ্ট নাম বলতে পারব না, তবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দোকানে এধরণের পণ্যের মধ্যে বাংলাদেশের পণ্যও আসছে৷ আসলে ‘হাই-এন্ড প্রোডাক্ট' তৈরির চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে মার্কেটিং করা৷''
পোশাক শিল্প খাতের অগ্রগতি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে আমরা শুধু শ্রমটাই বিক্রি করতাম৷ এখন পোশাক তৈরি সংক্রান্ত ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কাজ আমরা নিজেরাই করছি৷ তুলা থেকে সুতা তৈরি করে কাপড় বানানো থেকে শুরু করে সেগুলোর প্যাকিংয়ের কাজ পর্যন্ত হচ্ছে বাংলাদেশে৷ পাশাপাশি কাপড়ের জন্য প্রয়োজনীয় বোতাম, চেইনের মতো সামগ্রীও আমাদের দেশেই তৈরি হচ্ছে৷ এভাবে কাজের পরিমাণ দিনদিন বাড়ছে৷''
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীরা বিশেষ ভূমিকা রাখছে, বললেন জি এম কাদের৷ তবে তিনি চান রেমিট্যান্সের পরিমাণ আরো বাড়ুক৷ এজন্য বিদেশে প্রশিক্ষিত জনশক্তি রপ্তানির দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান জি এম কাদের৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা দক্ষ জনশক্তি বিদেশে রপ্তানি করতে চাচ্ছি৷ এজন্য বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে, নানা ধরণের কাজকর্ম করা হচ্ছে৷ প্রশিক্ষণ সুবিধা ভালো করা হচ্ছে৷ আমরা যখন অন্য দেশে জনশক্তি রপ্তানি করতে চুক্তি করি, তখন এই বিষয়ের দিকে নজর রাখা হচ্ছে৷''
ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের দেশের জনশক্তির ভূয়সী প্রশংসা করলেন বাণিজ্য মন্ত্রী জি এম কাদের৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশের জনগণ খুবই কাজের৷ আমি মনে করি তারা দক্ষ৷ এই কারণে যেকোন জায়গায় তাদের পাঠানো গেছে, যেকোন ধরণের কাজই তারা করতে পেরেছে এবং তারা ভালো করেছে৷''