বাসে গণধর্ষণ
২ জানুয়ারি ২০১৩কোথাও কনকনে শীত কোথাও সঙ্গে বৃষ্টিও, তারপরও প্রতিবছরের মতো এবারও নববর্ষ উদযাপনে ভিড় জমেছিল ভারতের প্রায় সব জায়গায়৷ সব জায়গাতেই একটা মিল ছিল খুব লক্ষণীয় বিদায়ী বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার শুভলগ্নে উঠে এসেছেন ‘আমানত'৷
পত্র-পত্রিকার খবর অনুযায়ী সোমবার বেশ রাত পর্যন্ত ভিড় ছিল কলকাতার পথঘাটে৷ দিল্লির মর্মান্তিক ঘটনাটির কারণে অতিরিক্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিল পুলিশ৷ বড় কোনো অঘটন কোথাও ঘটেনি, সেদিক থেকে বলা যায়, নিরাপত্তা রক্ষায় সফলই ছিল কলকাতার পুলিশ৷ ঝলমলে রোদ ছিল বলে সকাল থেকেই ভিড় জমেছিল চিড়িয়াখানা, নিকো পার্ক, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালসহ উল্লেখযোগ্য সব জায়গায়৷ পার্ক স্ট্রিটেও ছিল ঠাসাঠাসি ভিড়৷ বৃষ্টি শুরুর পরও আনন্দে মেতেছেন সবাই, সঙ্গে চলেছে দিল্লি-বারাসত কাণ্ডের প্রতিবাদ৷ মোমবাতি হাতে ‘আমানাত'-কে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁরা, তুলেছেন নারীর নিরাপত্তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি৷
এসবের কিছুই কিন্তু অপ্রত্যাশিত নয়৷ বড় কিছু ঘটলে মিডিয়ায়, জনজীবনে কিছুদিন এর প্রভাব থাকেই৷ দিল্লিতে অমানবিক ঘটনার শিকার মেয়েটির তাই মিছিলে, স্লোগানে, আড্ডায়, আনুষ্ঠানিকতায় থাকারই কথা৷ কলকাতার সুপরিচিত গায়ক, গীতিকার এবং কবি উদয় বন্দ্যোপাধ্যায় এসব দেখে তৃপ্ত, কিন্তু শঙ্কামুক্ত মোটেই নন৷ মানুষ যে বড় তাড়াতাড়ি ভুলে যায় সব! কাঙ্খিত পরিবর্তন তাই কখনোই পেরোতে পারেনা আকাঙ্খার চৌহদ্দি৷ উদয় নিজেও বহুবার এমনটি হতে দেখেছেন৷ সে অভিজ্ঞতা থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বহুল আলোচিত এক ধর্ষণের ঘটনার পর আসামীকে ফাঁসি দেয়া সত্ত্বেও লিখেছিলেন, ‘‘দু'দিন পরেই ফাঁসির খবর বাসি/কাগজগুলোয় অন্য হেডলাইন/ দু'দিন পরেই খুন-ধর্ষণ নেই/পবিত্র দেশ, চরিত্রবান দিন...''৷
এবারও কি তাই হবে? হবে না – এ কথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না, উদয় বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু সবার শুভবুদ্ধির উদয় হবে, সুদিন একদিন আসবে – এমান আশা করছেন একটা শর্ত দিয়ে৷ বলছেন, ‘‘সব মেনে না নিয়ে মনে নিলে তবেই আমরা যেমন চাই তেমনটি হবে একদিন৷''
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ