1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নরওয়ে হত্যাকাণ্ড

১৬ এপ্রিল ২০১২

নরওয়ের কুখ্যাত ঠান্ডা মাথার গণহত্যাকারী আন্ডার্স ব্রাইভিক আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে জানিয়েছে, এই আদালতকে সে মানে না৷ নরওয়ের আইনের নমনীয়তার ফাঁক গলে তার সাজা কম হতে পারে বলে ধারণা করছেন ওয়াকিবহাল মহল৷

https://p.dw.com/p/14eUl
ছবি: Reuters

২২ জুলাই ২০১১, ব্রাইভিকের অপরাধ

প্রথমে নরওয়ের রাজধানী অসলোর কেন্দ্রস্থলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, অর্থমন্ত্রক এবং তেল মন্ত্রকের সামনে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় ব্রাইভিক ২২ জুলাই, ২০১১ তারিখের সকালে৷ বিস্ফোরণে ৮ জনের মৃত্যু হয়৷ আহত হন প্রায় অর্দ্ধ শতাধিক ব্যক্তি৷ এরপর যুবকটি চলে যায় নরওয়ের উঠআইয়া দ্বীপে৷ যেখানে লেবার পার্টির যুব শাখার একটি গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প চলছিল৷ এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ৬৯ জনকে সেখানে হত্যা করে সে৷ আহতও হন বহু যুবক যুবতী৷ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ব্রাইভিক এই সমস্ত খুনের দায়িত্ব স্বীকার করে৷ কিন্তু দাবি করে সে কোনো অপরাধ করেনি৷ ব্রাইভিক’এর দাবি, নরওয়েকে বহুজাতিক মানুষের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার বিরুদ্ধে এ ছিল তার প্রতিবাদ৷ বিশেষ করে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির নীতির বিরোধিতা করতেই সে এই নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছে৷

Schießerei in Jugendlager auf der Insel Utoya Flash-Galerie
এই উটোইয়া দ্বীপেই চলেছে হত্যাযজ্ঞছবি: dapd

আদালতের ছবি

নরওয়ের আইনে মৃত্যুদণ্ড নেই৷ ব্রাইভিক’এর বিরুদ্ধে মোট ২২টি বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ তৈরি করেছে পুলিশ৷ সোমবার তাকে প্রথমবার আদালতে তোলা হলে দেখা যায় সে একটি কালো স্যুট পরা, বেশ হাসিখুশি এবং সপ্রতিভ এবং আত্মবিশ্বাসী৷ বিচারপতি ওয়েন এলিজাবেথ আর্নটজেনের আদালতে তাকে এনে হাতকড়া খুলে দেওয়ার পর, সে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফিস্ট স্যালুট জানায় টিভি ক্যামেরা লক্ষ্য করে৷ এরপর তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়, নিহতদের প্রত্যেকের নামও পড়ে শোনানো হয় আদালতে৷ বিস্তারিত বলা হয় কীভাবে তাঁদের প্রত্যেককে হত্যা করেছিল ব্রাইভিক৷ দেখানো হয় ব্রাইভিক’এর তৈরি করা এই খুনের দাবিপত্রের অডিও ভিস্যুয়াল৷ যা সে হত্যাকাণ্ডের দিনেই ইন্টারনেটে পোস্ট করেছিল৷ একমাত্র সেটি দেখানোর সময়ই ব্রাইভিক’কে চোখের জল মুছতে দেখা যায়৷ খুনি ব্রাইভিক জানায়, লেবার পার্টির এই সরকার এবং সরকার পরিচালিত আদালতকে সে মানতে রাজি নয়৷ সেক্ষেত্রে তার বিচার এখানে হচ্ছে যে তাতে তার সম্মতি নেই৷

নরওয়ের নমনীয় আইনের ফাঁক গলে ব্রাইভিক’এর সাজা কম হতে পারে!

সেরকমই একটা ধারণা করা হচ্ছে, এই ব্রাইভিক হয়তো বা মানসিক রোগের দোহাই দিয়ে এই মামলায় সবচেয়ে কম সাজায় পার পেয়ে যেতে পারে৷ কারণ, নরওয়ের আইনে মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষকে দীর্ঘদিন জেলে বন্দি রাখার নিয়ম নেই৷ তবে সে চেষ্টা ব্রাইভিক করলেও, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, ব্রাইভিক’কে বাকি জীবনের জন্য জেলে পুরে রাখার সাজাই শোনাবে নরওয়ের সর্বোচ্চ আদালত৷ এই মামলার শুনানি এখন চলবে৷ তবে, তীব্র দক্ষিণপন্থী মনোভাবাপন্ন ব্রাইভিক নামের এই খুনির বিচার এবং সাজা শুনতে সময় লাগবে বেশ কিছুদিন৷ যদিও বিশেষজ্ঞদের অনুমান প্রাথমিকভাবে ২১ বছরের সাজা হবেই ৩৩ বছর বয়সী ব্রাইভিকের৷ পরে সেটা আরও বাড়বে এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বাকি জীবনটা তাকে কাটাতে হতে পারে কারন্তরালে৷

নরওয়ের ইতিহাসের সবচেয়ে নারকীয় কাণ্ড

অতীতে কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি নরওয়েতে৷ কয়েক শতাব্দের মধ্যে শীর্ষ জঘন্য ঘটনা এটি৷ একজন মানুষ এতজনকে হত্যা করেছে ঠান্ডা মাথায়৷ নিহতদের পরিবারের অনেকেই আদালতে এসেছিলেন সোমবার৷ তাঁরা স্বচক্ষে দেখতে চান ব্রাইভিক’এর ঠিক কী সাজা হয়৷ বিচারের প্রক্রিয়া এখন শুরু হয়েছে৷ এবং এই প্রক্রিয়া শেষ হতে কিছু সময় লাগবে৷ তবে এতটা চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা নরওয়ের সমাজকে বিশেষভাবে নাড়া দিয়ে গেছে বলে জানাচ্ছে স্থানীয় মিডিয়া৷ বলা হচ্ছে, ২২শে জুলাই ২০১১ সালের পরের নরওয়ে একটি ভিন্ন দেশ৷ যেখানে আতঙ্ক হয়ে উঠেছে অনেকেরই প্রধান বোধ৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, (রয়টার্স,এপি,ডিপিএ)
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য