আরও কড়া লকডাউনের মুখে জার্মানি
২২ মার্চ ২০২১বেশ কয়েক মাস ধরে জার্মানিতে লাগাতার লকডাউনচলে আসছে৷ কখনো বিধিনিয়ম কড়া করা হচ্ছে, কখনো সামান্য শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে৷ করোনা সংকটের মোকাবিলায় সরকার ও প্রশাসন অন্য কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জোরালো সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ একাধিক সূত্র অনুযায়ী সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যালোচনা করে লকডাউনের মেয়াদ ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত বাড়াতে চলেছেন৷ সেইসঙ্গে করোনা সংক্রমণের হার কমাতে আরও কড়া পদক্ষেপও ঘোষণা করতে পারেন তারা৷ রাত থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ জারি করার প্রস্তাবও বিবেচনা করছেন তাঁরা৷
রোববার জার্মানিতেপ্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার ১০০ পেরিয়ে গেছে৷ অথচ সপ্তাহান্তে করোনা পরীক্ষার সব তথ্য রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের কাছে না পৌঁছানোর কারণে প্রকৃত চিত্র পাওয়া কঠিন হয়৷ তাই চলতি সপ্তাহে সংক্রমণের হার আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটগুলিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে৷ মে মাসের শুরুতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের এমন জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন পড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন৷
আসন্ন ইস্টারের ছুটিতে পরিস্থিতির আরও অবনতি এড়াতে তাই কড়া পদক্ষেপের প্রয়োজন দেখছেন বিশেষজ্ঞরা৷ কিন্তু সরকারের প্রতি মানুষের বেড়ে চলা অসন্তোষ সত্ত্বেও কড়াকড়ি কার্যকর করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে৷ দুর্নীতি কেলেঙ্কারি ও সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ জোরালো হচ্ছে৷
মোটকথা জার্মানিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চলমান ‘তৃতীয় ঢেউ' আরও মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন৷ এখনও সবার জন্য সহজে করোনা পরীক্ষা ও করোনার টিকার যথেষ্ট জোগান না থাকায় পরিস্থিতির উন্নতির আশা অত্যন্ত ক্ষীণ৷ এপ্রিল মাস থেকে টিকার সরবরাহ বাড়তে শুরু করলে এবং দেশজুড়ে টিকাদানকর্মসূচির গতি বাড়ানো সম্ভব হলে তবেই কিছু অগ্রগতি সম্ভব৷ তার আগে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করার উপর জোর দিচ্ছে প্রশাসন৷
অথচ চ্যান্সেলর ও মুখ্যমন্ত্রীরা গত বৈঠকে বিধিনিয়ম আরও শিথিল করার আশা প্রকাশ করেছিলেন৷ গত বৈঠকে কড়া শর্তে চুল কাটার সেলুন, দোকান-বাজার ইত্যাদি খোলার পর চলতি সপ্তাহে খোলা আকাশের নীচে রেস্তোরাঁ খোলার মতো সিদ্ধান্ত নেবার কথা ছিল৷ বেড়ে চলা সংক্রমণের হার সেই প্রত্যাশা কেড়ে নিচ্ছে৷ এমন বিলম্বের ফলে বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)