আরও তিন রাজধানী তালেবানের হাতে
৯ আগস্ট ২০২১রোববার আফগানিস্তানের একাধিক আঞ্চলিক রাজধানী দখল করেছে তালেবান ফৌজ। শনিবারও তারা বেশ কিছু অঞ্চল দখল করেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহর ছেড়ে কার্যত পালিয়ে গেছে আফগান সেনা। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আফগানিস্তান নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে অ্যামেরিকা এবং রাশিয়া। তালেবানকে আক্রমণ বন্ধের আর্জি জাতিসংঘের।
শুক্রবার তালেবান দখল করেছিল গুরুত্বপূর্ণ জারাঞ্জ শহর। শনিবার তাদের হাতে আসে উত্তরাঞ্চলের জজযান প্রদেশের শহর শেবেরঘান। রোববার তারা দখল করেছে উত্তরাঞ্চলের কুন্দুজ, সার-ই-পোল এবং তালোকান। তালেবানের মুখপাত্র সংবাদসংস্থাকে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, এই তিনটি শহরই সম্পূর্ণ ভাবে তাদের হাতে চলে এসেছে। জানানো হয়েছে, তালেবান বাহিনীর সামনে মাত্র কয়েকঘণ্টা প্রতিরোধ তৈরি করতে পেরেছিল আফগান বাহিনী। আক্রমণের মুখে তারা পালিয়ে যায়। কুন্দুজে পুলিশ হেডকোয়ার্টার, গভর্নরের বাসভবন এবং কারাগার তালেবান প্রতিনিধিরা দখল করে নিয়েছে। সেখানে তারা নিজেদের ঘাঁটিও তৈরি করে ফেলেছে। বিমানবন্দরেও পৌঁছে গেছে তালেবান ফৌজ।
স্থানীয় মানুষ সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছে, রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মৃতদেহ। সাধারণ মানুষ বাড়ির বাইরে বেরনোর সাহস পাচ্ছেন না। শহর ছেড়ে পালানোর পথও বন্ধ। কারণ, শহর ঘিরে রেখেছে তালেবান ফৌজ। একমাস আগে আফগানিস্তানের অর্ধেকের বেশি অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়েছিল তালেবান। বিভিন্ন প্রদেশ দখল করলেও রাজধানীতে ঢুকছিল না তারা। ঘিরে রেখেছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে তারা একের পর এক রাজধানী দখল করতে শুরু করেছে।
জাতিসংঘে আফগানিস্তান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে এর মধ্যেই। নিরাপত্তা পরিষদের সেই বৈঠকে তালেবানের কাছে বিবৃতি পাঠানো হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে আক্রমণ বন্ধ করতে হবে তাদের। রাজনৈতিক সমাধান সূত্র খুঁজে বার করতে হবে। তবে তালেবান এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।
জাতিসংঘে অ্যামেরিকার প্রতিনিধি আফগানিস্তান নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। রাশিয়াও তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিদেশি সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্যই আফগানিস্তানে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেছে।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালেবানের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তারা শান্তি চান। সাধারণ মানুষকে তারা আক্রমণ করছেন না। কিন্তু সংবাদসংস্থাকেই সাধারণ আফগানরা জানিয়েছেন, তালেবানের ভয়ে তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। সরকার এবং বিদেশি এনজিও কর্মীদের বাড়ি গিয়ে তালেবান হুমকি দিচ্ছে। তাদের হত্যা করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি, আল জাজিরা)