আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়ার বিশেষ অস্ত্রের মহড়া
২৭ অক্টোবর ২০২২ক্রেমলিন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের নেতৃত্বে এই মহড়া হয়েছে। স্থল, জল এবং আকাশে একসঙ্গে মহড়া হয়েছে। মহড়ায় ব্যালেস্টিক এবং ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষা হয়েছে। আর্কটিক অঞ্চলের সমুদ্রে যা নিক্ষেপ করা হয়েছে। যে সেনা দল এই মহড়ায় অংশ নিয়েছিল, তারা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণ পেয়েছে। তাদের নিয়ে এই মহড়া ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তাপ আরো অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়া পরমাণু অস্ত্রের ভয় দেখাচ্ছে।
ক্রেমলিন অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চায়নি। তাদের পাল্টা বক্তব্য, সম্প্রতি ন্যাটো বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য এবং উত্তর সাগরে একই ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষা করেছে। মহড়াও হয়েছে। তার পরেই মস্কো এই মহড়ার আয়োজন করেছে। পশ্চিমা দেশগুলির সাহায্যে ইউক্রেন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করলে রাশিয়া যাতে তার উত্তর দিতে পারে, তার জন্যই এই মহড়া বলে জানানো হয়েছে।
বস্তুত, গত প্রায় একমাস ধরে ইউক্রেন এবং রাশিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা প্রকাশ করছে। রাশিয়া প্রথম বলেছিল, ইউক্রেন 'খারাপ অস্ত্র' বা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যার উত্তরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেনের উপর চাপ সৃষ্টি করে রাশিয়াই আসলে গোপনে ওই অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছেন। তারই মধ্যে রাশিয়ার এই মহড়া উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জেলেনস্কির দাবি
এদিকে জেলেনস্কি বুধবার রাতে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সেনা পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনে এখনো তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার সেনাকে তারা বেশ কিছুটা পিছনে সরিয়ে দিতে পেরেছে। রাশিয়া সেই ফ্রন্টলাইন এখন বদলাতে পারেনি।
জেলেনস্কির দাবি, দনবাস অঞ্চলে সবচেয়ে কঠিন লড়াই হচ্ছে। দনেৎস্কে ইউক্রেনের সেনা কঠিন লড়াই চালাচ্ছে। সর্বত্রই রাশিয়ার সেনা পিছু হঠতে বাধ্য হচ্ছে। রাশিয়ার সেনা বাখমুত শহরটি বার বার দখলের চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। যদিও রাশিয়ার তরফে এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
জেলেনস্কির বক্তব্য, রাশিয়া ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করে চলেছে ওই এলাকাগুলিতে। প্রতিদিন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছেন তারা। রাশিয়ার সেনা কোনোকিছুই গ্রাহ্য করছে না। তবে দনবাস অঞ্চল ছাড়া অন্য অঞ্চলগুলির ফ্রন্টলাইনের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জেলেনস্কি জানাননি।
রয়টার্সের তথ্য
খারকিভ থেকে ইউক্রেনের সেনার তাড়া খেয়ে রাতারাতি বেশ খানিকটা পিছিয়ে যেতে হয়েছিল রাশিয়ার সেনাকে। পালানোর সময় তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ফেলে গেছিল বলে দাবি। সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তাদের হাতে সেই সমস্ত নথি এসে পৌঁছেছে। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ার সেনার ভয়াবহ অবস্থা।
নথিতে বলা হয়েছে, মাত্র ২০ শতাংশ সেনা নিয়ে রাশিয়াকে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। সেনাবাহিনীতে বহু জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে ওই রিপোর্টে আছে।রয়টার্সের দাবি, রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর অধিকাংশ জওয়ান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই রিপোর্ট নিয়েও রাশিয়া এখনো মুখ খোলেনি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)