1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আর্কটিকের সমুদ্রতল থেকে বের হচ্ছে বিষাক্ত গ্যাস

১৭ মে ২০০৯

গোটা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে চলছে পরিবেশবাদীদের নানামুখী আন্দোলন৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানো যাচ্ছে না৷ সম্প্রতি জানা গেছে উত্তর মেরুর বরফ যে হারে গলছে তাতে পরিবেশের আরো বিপর্যয় আসন্ন৷

https://p.dw.com/p/Hs8w
আর্কটিকের বরফের নিচে জমে আছে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ এবং গ্যাসছবি: DW/ Irene Quaile

জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে দিন দিন পরিবেশবাদীরা আরো সোচ্চার হয়ে উঠছে৷ একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশও আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন৷ কিন্তু এরপরও জলবায়ু পরিবর্তন অব্যাহত রয়েছে৷ বিশেষ করে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন না কমার ফলে উত্তর মেরুর বিশাল এলাকার বরফ গলতে শুরু করেছে৷ সম্প্রতি উত্তর মেরু বা আর্কটিক এলাকার একটি বিশাল আকারের বরফ খণ্ড মূল ভুখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে গেছে যার আয়তন গোটা নিউইয়র্ক শহরের সমান৷ তাই পরিবেশ নিয়ে বিশ্ববাসীর চিন্তা ক্রমেই বাড়ছে৷ আর্কটিকের ওপর নজরদারী করার জন্য আটটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত আর্কটিক কাউন্সিল রয়েছে৷ এ দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ড৷ এসব দেশ আর্কটিক অঞ্চলের পরিবেশ নিয়ে নানা গবেষণা ছাড়াও এর সংরক্ষণের বিষয়টিও দেখাশোনা করে থাকে৷

Nordpolarmeer
স্যাটেলাইট থেকে উত্তর মেরু এমনটি দেখায়ছবি: AP

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আর্কটিকের বিশাল বরফ খণ্ড গুলো গলে যাচ্ছে৷ এতে করে কিছু উপকার যে হচ্ছে না তা নয়৷ যেমন বরফ গলে যাওয়ার কারণে নতুন নতুন নৌপথের সৃষ্টি হচ্ছে ফলে জাহাজ আগের চেয়ে সহজে চলাচল করতে পারছে৷ সাগরের নিচে তেল গ্যাস সহ নানা খনিজ পদার্থ অনুসন্ধান করাটাও আগের চেয়ে সহজ হয়ে পড়ছে৷ কিন্তু এ উপকারের পরিবর্তে যে ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে গোটা পরিবেশ তার মাত্রা কিন্তু ভয়াবহ৷ প্রথমেই আসবে বরফ গলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার বিষয়টি৷ জাতিসংঘ মনে করছে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বরফ গলার কারণে এ শতকে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ৭ থেকে ২৩ ইঞ্চি পর্যন্ত বাড়বে৷ তবে অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন এক মিটার পর্যন্ত উচ্চতা বাড়তে পারে যা আমেরিকার ফ্লোরিডা কিংবা বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র উপকূল এলাকাকে তলিয়ে দেবে৷

উত্তর মেরুর বিশাল বরফ খণ্ড গলে যাওয়ার ফলে যে কেবল সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার আশংকা আছে তা-ই নয়৷ এ বিশাল বরফ খণ্ডের তলদেশে আটকে আছে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ সহ গ্যাস৷ এসব গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশে ছড়িয়ে পড়লে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ ২০০১ সালে জাতিসংঘের একটি চুক্তিতে ১২ প্রকারের রাসায়নিক পদার্থ চিহ্নিত করা হয় এবং এসব পদার্থ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ তবে আর্কটিক মনিটরিং এন্ড এ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রাম এএমএপি জানিয়েছে আর্কটিকের বরফ গলে যাওয়ার কারণে বরফের তলদেশ থেকে জমে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ এবং গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে৷ এসব পদার্থ মেরু অঞ্চলে বসবাসকারী জনগণের জন্য খুবই ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে৷ ডার্টি ডজন নামে ১২ প্রকারের নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশে ছড়িয়ে পড়লে তা ক্যান্সার ও মস্তিষ্কে ক্ষতি করে৷ এছাড়া নারীদের বাচ্চা জন্মদানের সময় জটিলতারও সৃষ্টি হয়৷ পরিবেশবাদীরা বলছেন, মানুষের সৃষ্ট এ বিপর্যয় কেবল মানব জাতির জন্যই বিপজ্জনক নয় মেরু অঞ্চলের প্রাণীকুলের অস্তিত্বের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার