আর্জেন্টিনাকে কাঁদিয়ে জার্মানির স্বপ্নপূরণ
১৪ জুলাই ২০১৪অভিজ্ঞ মিরোস্লাভ ক্লোজের উপর ভরসা রেখে ৮৮ মিনিট পর্যন্ত তাঁকে মাঠে রেখেছিলেন ল্যোভ৷ এরপর তাঁর বদলে মাঠে পাঠান বায়ার্নের গ্যোটৎসেকে৷ শেষ পর্যন্ত তিনিই জার্মানদের মুখে হাসি ফোটালেন৷ শ্যুর্লের কাছ থেকে পাওয়া পাস বুকে ঠেকিয়ে নিয়ে সেই বল পাঠিয়ে দেন আর্জেন্টিনার জালে৷
এর আগে আর্জেন্টিনার পক্ষে গোলের সহজ সুযোগ মিস করেন হিগুয়াইন, পালাসিও আর মেসি৷ ২০ মিনিটের সময় জার্মানির টোনি ক্রোসের হেড থেকে বল পেয়ে যান হিগুয়াইন৷ সেসময় তাঁর সামনে ছিলেন শুধু জার্মান গোলরক্ষক নয়ার৷ কিন্তু তারপরও গোল করতে ব্যর্থ হন হিগুয়াইন৷ এরপর ৩০ মিনিটের সময় লাভেজ্জির ক্রস থেকে বল পেয়ে গোল করলেও হিগুয়াইন ছিলেন অফসাইডে৷
এরপর সুযোগ আসে জার্মানির৷ ৪৬ মিনিটের সময় কর্নার থেকে পাওয়া বলে হেড করে হ্যোভেডেজ৷ কিন্তু বারে লেগে সেটা ফিরে আসে৷
টিমওয়ার্ক
জার্মান দলে সে অর্থে কোনো তারকা ফুটবলার নেই৷ কিন্তু তাঁদের আছে একটা ভালো টিম৷ এবং সেটাই তাঁদের সাফল্যের কারণ৷ ম্যাচ শেষে সেটাই বললেন জার্মান অধিনায়ক ফিলিপ লাম৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যা অর্জন করেছি সেটা অবিশ্বাস্য৷ আমাদের কোনো একক সেরা খেলোয়াড় আছে কীনা সেটা কোনো বিষয় নয়৷ আমাদের আছে একটা সেরা দল৷’’ অধিনায়কের সঙ্গে একই সুরে কথা বললেন গোলরক্ষক নয়ারও৷ তিনি বলেন, ‘‘দলের যারা খেলার সুযোগ পাননি তাঁরাও দলের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ছিলেন৷ সেই টিমস্পিরিটই আমাদের জিতিয়েছে৷’’
ব্যর্থ মেসি
লিওনেল মেসির সামনে সুযোগ ছিল মারাদোনার পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যাওয়ার৷ কিন্তু ফাইনালে যেন তাঁকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি৷ গোল করার মতো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি৷ তবে সান্ত্বনা হিসেবে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাবটি অবশ্য জিতেছেন চারবারের বর্ষসেরা এই ফুটবলার৷
সাবেলার দুঃখ
তৃতীয়বারের মতো দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিতে না পারলেও নিজের ছেলেদের খেলায় খুশি সাবেলা৷ ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘‘শিরোপা জিততে না পারায় দুঃখ লাগছে৷ তবে আমি আমার দলের জন্য গর্বিত৷ ছেলেরা দারুণ খেলেছে৷’’ মিডফিল্ডার মাসকেরানো বলেছেন, ‘‘এই দুঃখ আমাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে৷ আমরা আর্জেন্টিনাকে আবারও শিরোপা এনে দিতে চেয়েছিলাম৷’’
অবশেষে ল্যোভের সাফল্য
প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতলেন জার্মান কোচ ল্যোভ৷ ২০০৬ সালে ক্লিন্সমানের কাছ থেকে দায়িত্ব পাওয়ার পর ২০০৮ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপ, ২০১০ সালের বিশ্বকাপ আর ২০১২ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপে সেমিফাইনালে তুলেছিলেন জার্মানিকে৷ কিন্তু শিরোপার দেখা পাচ্ছিলেন না তিনি৷ এবার তাই শিরোপা জেতার একটা চাপ ছিল তাঁর ওপর৷
এর আগে আরও দুবার বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল জার্মানি আর আর্জেন্টিনা৷ ১৯৮৬ সালে জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা৷ এর চার বছর পর ফল উল্টে দিয়ে বিশ্বকাপ জেতে জার্মানি৷
জেডএইচ/এআই (এএফপি, ডিপিএ)