আশির দশকের যত ‘আইকন’
প্রতিটি দশকই নিজ নিজ বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ৷ কিন্তু রাজনীতি, প্রযুক্তির উন্নয়নসহ নানা কারণে গত শতকের আশির দশক ছিল একটু আলাদা৷ এমন কিছু বিষয় নিয়ে এই ছবিঘর৷
বিভক্ত বিশ্ব
পূর্ব-পশ্চিম. পুঁজিবাদ-সমাজতন্ত্র বিভক্তি তখন তুঙ্গে৷ মার্কিন ও রুশপন্থি ব্লকের দ্বন্দ্বে বাড়ছে সামরিক উত্তেজনা৷ যেকোনো মুহূর্তে শুরু হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ৷ দুই পক্ষই একে অপরের দিকে তাক করে রেখেছে পরমাণু মিসাইল৷ পুরো দশক এই উত্তেজনা চললেও শেষের দিকে এসে বার্লিন দেয়ালের পতনে কার্যত শুরু হয় শান্তি প্রক্রিয়ার৷ ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর পুনরেকত্রিত হয় জার্মানি৷
রুবিকস কিউব
১৯৮১ সালে শুরু হয় রুবিকস কিউবের উত্থান৷ নিনটেনডো এবং মোবাইল ফোন আসার আগে আশির দশকের শিশুদের সময় কাটতো এই কিউব হাতে নিয়েই৷ এখনো বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত খেলনার তালিকায় আছে এই কিউবের নাম৷ ২০১৮ সালে মাত্র ৪ দশমিক ২২ সেকেন্ডে রুবিকস কিউব সমাধান করে রেকর্ড করেন এক অস্ট্রেলিয়ান৷
চুলের স্টাইল- মুলেট
সামনের দিকে ছোট, কিন্তু পেছনে ঘাড়ের ওপর লম্বা করে রাখা চুলের আশির দশকের স্টাইলের নাম মুলেট৷ টেনিস তারকা আন্দ্রে আগাসি, গায়ক জর্জ মাইকেল এবং ইউটু’র বোনোর মতো অনেক বড় বড় তারকাও এই হেয়ারস্টাইল ফলো করতেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য ধীরে ধীরে সমকামী নারীদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এই স্টাইল৷
ওয়াকম্যান
হাঁটতে হাঁটতে গান শোনা যাবে, এমন কল্পনা বাস্তবে রূপ নেয় আশির দশকে৷ মাথায় হেডফোন আর বেল্টে গুঁজে রাখা ওয়াকম্যান ছিল আধুনিক যুগের তরুণদের পরিচয়৷ হাডফোন থাকলেও ভলিউম এতটাই বাড়িয়ে দেয়া হতো যে, আশেপাশের মানুষও শুনতে পেতো, শ্রোতা ঠিক কোন গান শুনছেন৷ এক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য সব প্রজন্মের তুলনায় আশির দশকের যুবাদেরই শ্রবণশক্তির সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়েছে বেশি৷
বাড়িতে কম্পিউটার!
আশির দশকে বিশাল আকারের কম্পিউটার ছোট হতে হতে একসময় মানুষের বৈঠকখানাতেই ঢুকে পড়ে৷ ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট কর্প-এর প্রতিষ্ঠাতা কেন ওলসেন বলেছিলেন, ‘‘মানুষের বাসায় কম্পিউটার থাকার কোনো প্রয়োজন নেই৷’’ সে প্রয়োজন আদৌ আছে কিনা, বেঁচে থাকলে সে উত্তর এখন হয়তো ওলসেন নিজেই ভালো দিতে পারতেন৷
প্যাক ম্যান
কম্পিউটার গেমের শুরুর দিকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল প্যাক ম্যান৷ এক গোলক ধাঁধার মধ্যে খেলোয়াড়কে একটি হলুদ বল পরিচালনা করতে হতো৷ গোলকের মধ্যে ঘুরতে থাকা চারটি ভূতকে এড়িয়ে ক্রমাগত জ্বলতে-নিভতে থাকা বিন্দু খাওয়াই ছিলো মূল লক্ষ্য৷
ই.টি. ভিনগ্রহের গল্প
১৯৮২ সালে স্টিভেন স্পিলবার্গের ব্লকবাস্টার সায়েন্সফিকশন ‘ই.টি- দ্য এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল’ বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে৷ এক ভিনগ্রহবাসীর পৃথিবীতে থেকে যাওয়ার দুঃখ অনেকে চোখেই জল এনেছে৷ এই সিনেমার ‘ই.টি. ফোন হোম’ এখনো চলচ্চিত্রে সবচেয়ে বিখ্যাত ডায়লগগুলোর মধ্যে একটি৷
মাইকেল জ্যাকসন
১৯৮২ সালে মাইকেল জ্যাকসনের থ্রিলার অ্যালবাম মুক্তি দেয় দশকের সবচেয়ে বড় প্রডিউসার কুইন্সি জোনস৷ পুরো বিশ্ব ‘বিট ইট’, ‘বিলি জিন’ আর টাইটেল ট্র্যাক ‘থ্রিলার’- এর ছন্দে নাচতে থাকে৷ থ্রিলার গানে জম্বিদের ব্র্যাক ড্যান্স এখনো সব বয়সি শ্রোতার কাছে সমান জনপ্রিয়৷ বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত একক অ্যালবামের রেকর্ড এখনো থ্রিলারের দখলে৷