জুলিয়ান আসাঞ্জ
২৩ আগস্ট ২০১২উইকিলিক্স'এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান আসাঞ্জকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়' প্রদানের ঘোষণা দিয়ে গত সপ্তাহে আলোড়ন সৃষ্টি করে ইকুয়েডর৷ ৪১ বছর বয়সি এই অস্ট্রেলিয়ানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে সুইডেনে৷ এই বিষয়ে আসাঞ্জকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সুইডেন৷ যুক্তরাজ্যও আসাঞ্জকে সুইডেনে ফেরত পাঠাতে রাজি৷ কিন্তু আসাঞ্জ সুইডেনে ফিরে যেতে রাজি নন৷ তিনি দাবি করেন, সুইডেন তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে৷ কেননা, উইকিলিক্স'এর মাধ্যমে মার্কিন গোপন নথি প্রকাশ করায় তাঁর বিচার করতে চায় সেদেশ৷
দু'মাস আগে লন্ডনে অবস্থিত ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় গ্রহণ করেন আসাঞ্জ৷ গত সপ্তাহে তাঁকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়' প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি৷ কিন্তু তাসত্ত্বেও এখনো লন্ডনেই অবস্থান করতে হচ্ছে আসাঞ্জকে৷ কেন না, দূতবাস থেকে ইকুয়েডরে যেতে চাইলে যুক্তরাজ্যের সহায়তা প্রয়োজন৷ কিন্তু যুক্তরাজ্য সে সহায়তা করতে রাজি নয়৷
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরিয়া মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, ‘‘যুক্তরাজ্য আমাদের দূতাবাসে প্রবেশ করে আসাঞ্জকে গ্রেপ্তারের হুমকি প্রদান করে যে ‘গুরুতর ভুল' করেছে, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে৷ তবে এই রূঢ়, অপ্রাসঙ্গিক ও অগ্রহণযোগ্য হুমকি সত্ত্বেও আমরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত৷''
সুইডেন যে আসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সমর্পন করবে, সেরকম সম্ভাবনা তেমন একটা দেখছে না অস্ট্রেলিয়া৷ সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড এবং সামরিক আদালতে বিচারের ঝুঁকি থাকলে সুইডেনের আসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সমপর্ণের সম্ভাবনা তেমন একটা নেই৷
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বব খা এই বিষয়ে বলেছেন, ‘‘নিজস্ব গণ্ডির বাইরের কোনো মামলায় অস্ট্রেলিয়া হস্তক্ষেপ করতে পারে না৷ তবে স্টকহোম আমাদেরকে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, সাবেক এই হ্যাকারকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা তেমন একটা নেই৷''
অবশ্য ‘আসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে না', এরকম নিশ্চয়তা এর আগে সুইডেনের কাছে দাবি করেছিল উইকিলিক্স৷ কিন্তু স্টকহোম বলছে, এধরনের নিশ্চয়তা সুইডেনের পক্ষে প্রদান করা সম্ভব নয়, যদিও যুক্তরাষ্ট্র তা প্রদান করতে পারে৷ সুইডেনের বিচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পার হেডবেল এ বিষয়ে জানিয়েছেন যে, মৃত্যুদণ্ড চালু আছে এমন কোনো দেশ, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, যদি কোনো ব্যক্তিকে সেদেশের কাছে হস্তান্তরের জন্য সুইডেনের কাছে আবেদন করে, তাহলে দেশটিকে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে যে, সেই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান বা তা কার্যকর করা হবে না৷
এদিকে, আসাঞ্জ সমর্থকরা যুক্তরাজ্য সরকারের একাধিক ওয়েবসাইটে ‘সাইবার হামলা' চালিয়েছে৷ সেদেশের বিচার মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে হ্যাকারদের উৎপাতের বিষয়টি স্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ৷ তবে এতে করে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি কিংবা দীর্ঘ সময়ের জন্য সাইটগুলো বন্ধও হয়ে যায়নি৷
এআই / ডিজি (এএফপি)