ইঁদুর দৌড়ে গুগল প্লাস আর ফেসবুক
২২ সেপ্টেম্বর ২০১১এর কারণ একটাই৷ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট'গুলির মধ্যে নিজের প্রতিপত্তি বজায় রাখা৷ স্বাভাবিকভাবেই, এই মুহূর্তে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট'গুলির মধ্যে ফেসবুকই সবচেয়ে এগিয়ে৷ বিশ্বব্যাপী ফেসবুকের রয়েছে অন্ততপক্ষে ৭৫ কোটি ব্যাবহারকারী৷ জানিয়েছেন ফেসবুকের প্রধান মার্ক জাকারবার্গ স্বয়ং৷ কিন্তু, আজকের এই হাই-টেক যুগে এগিয়ে থাকাটা হয়তো সব সময়ই সাময়িক৷ তাই ১২ সপ্তাহ আগে সার্চ জায়ান্ট গুগল তার আধুনিকতম সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ‘গুগল প্লাস' চালু করার পর থেকে মুখে স্বীকার না করলেও, ফেসবুক যে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার গন্ধ পাচ্ছিল – তা বলাই বাহুল্য৷
হবে না? মাত্র ১২ সপ্তাহেই যে গুগল প্লাস'এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আড়াই কোটি৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আড়াই কোটি ব্যবহারকারী নিয়েই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং জায়ান্ট ফেসবুকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে চায় গুগল৷ আর সে জন্যই তড়িঘড়ি এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল৷ জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স৷
গত মঙ্গলবার গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, এখন চাইলেই গুগল প্লাসে যে কেউ সরসারি সাইন আপ বা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন৷ এতোদিন পর্যন্ত অবশ্য শুধুমাত্র আইটি স্পেশালিস্ট এবং সাংবাদিকদের জন্য গুগল প্লাস'এর এই সেবা উন্মুক্ত ছিল৷ তবে কোনো গুগল প্লাস ব্যাবহারকারীর কাছে থেকে আমন্ত্রণ পেলে, অন্যরাও পেতো গুগল প্লাসে অ্যাকাউন্ট খোলার সম্মতি৷
শোনা যাচ্ছে, গুগল প্লাস সাইটটিকে আরো জনপ্রিয় এবং উন্নত করতে নতুন অনেক ফিচার যোগ করবে সার্চ জায়ান্ট গুগল৷ এই যেমন, তৈরি হবে গুগল প্লাসের একটি ‘বিটা' সংস্করণ৷ এদিকে, সহজে সব কিছু বের করার জন্য গুগল প্লাসের মধ্যেই একটি ‘সার্চ অপশন' যোগ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ এতে ব্যবহারকারীর সংখ্যা যে বাড়বে, তাতে ১০০ ভাগ নিশ্চিত গুগল'এর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভিক গুন্ডোৎরা৷ এছাড়াও, গুগল প্লাসের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ‘ভিডিও চ্যাটিং'-এর সুবিধা৷ নতুন এই উন্মুক্ত গুগল প্লাসে তাই চালু করে হয়েছে ‘হ্যাংআউট' ফিচার৷ যার মাধ্যমে শুধু যে অনেকের সঙ্গে একসঙ্গে ‘চ্যাট' করা যাবে – তাই নয়, নিজের ‘ডেস্কটপ'টিও শেয়ার করা যাবে অন্যদের সাথে৷
অন্যদিকে, গুগল প্লাস সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পরপরই একটি ‘টিকার' চ্যাট কলাম যোগ করেছে ফেসবুক৷ ফেসবুকের প্রডাক্ট ম্যানেজার কিথ শ্যাখ্ট জানিয়েছেন, টিকার'এর মাধ্যমে সদ্য ‘আপডেট' করা মেসেজ নিয়ে চ্যাট করা যাবে সহজেই৷ তবে গুগল'এর ‘হ্যাংআউট' ফিচারটির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই যে টিকার'এর সংযোজন করা হয়েছে – বিশেষজ্ঞদের এহেন যুক্তি পুরোপুরি খণ্ডন করেছেন তিনি৷ শ্যাখ্ট'এর কথায়, অনেকদিন আগে থেকেই এরকম একটা ফিচার তৈরির চেষ্টা করছিল ফেসবুক৷ শুধু তাই নয়, ফেসবুকে বন্ধু নয়, এমন লোকদেরও ‘টুইটার-স্টাইল'-এ মেসেজ পাঠানোর নতুন অপর একটি ফিচার আসতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কিথ শ্যাখ্ট৷
তবে এই ইঁদুর দৌড়ে আর যাই হোক, মোটের ওপর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং'এর যে উন্নতি হবে – তা আর বলতে!
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক