ইউক্রেনকে চিতা ট্যাংক সরবরাহ করবে জার্মানি
২৭ এপ্রিল ২০২২যাবতীয় জল্পনাকল্পনার অবসান করে জার্মানি অবশেষে ইউক্রেনকে ভারি অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা করেছে৷ রামস্টাইন বিমান ঘাঁটিতে পশ্চিমা দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এক বৈঠকে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট বলেন, রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনকে ৫০টি গেপার্ড বা চিতা ট্যাংক সরবরাহ করা হবে৷ জার্মানির কেএমডাব্লিউ কোম্পানির এই ট্যাংকে বিমান বিধ্বংসী বন্দুকও রয়েছে৷ লামব্রেশট বলেন, সরকারের ঘোষিত নীতি অনুযায়ী ইউক্রেন সরাসরি জার্মান বেসরকারী কোম্পানি থেকে অস্ত্র ও সরঞ্জাম কিনবে এবং জার্মানি তার দাম মেটাবে৷
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জার্মানির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই চিতা প্রণালী ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা মজবুত করবে৷ উল্লেখ্য, গেপার্ড ট্যাংক সরবরাহের অনুমতি দিলেও জার্মানির রাইনমেটাল কোম্পানির ১০০টি পুরানো মার্ডার ট্যাংক ও ৮৮টি পুরানো লেপার্ড ওয়ানএফাইভ ট্যাংকের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয় নি শলৎসের সরকার৷
ইউক্রেনকে ভারি অস্ত্র সরবরাহের প্রশ্নে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রবল চাপের মুখে পড়েছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার৷ ইউক্রেন ও ইউরোপীয় সহযোগী তো বটেই, জার্মানির বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, এমনকি সরকারি জোটের মধ্যেও শলৎসের এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্বের প্রবল সমালোচনা শোনা যাচ্ছিল৷ গেপার্ড ট্যাংকের কার্যকরিতা নিয়ে কিছু বিতর্ক থাকলেও যুদ্ধক্ষেত্রে ভারি অস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে জার্মানির নীতি পরিবর্তন অবশ্যই বিশেষ নজর কাড়ছে৷ পোল্যান্ডের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিমন শিনকফস্কি সেই পরিবর্তনকে স্বাগত জানালেও এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বলে জার্মান সরকারের সমালোচনা করেছেন৷
চ্যান্সেলর শলৎস অবশ্য তার অবস্থানে এখনো অটল রয়েছেন৷ তার মতে, খোদ জার্মান সেনাবাহিনীর এতকালের দুর্বলতার কারণে অন্যদের সাহায্যের ক্ষমতা কম৷ ইউক্রেনকে যা দেওয়া হয়েছে, এর বেশি আর তেমন কিছু দেওয়া সম্ভব নয়৷ জার্মানি তথা ন্যাটোর সুরক্ষার ক্ষমতা আরও দুর্বল না করে বুন্ডেসভেয়ারকে কাজ করতে হবে৷ তাছাড়া মস্কো জার্মানিকে যুদ্ধের অংশীদার হিসেবে গণ্য করলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার আশঙ্কা রয়েছে বলে শলৎস মনে করেন৷
অভ্যন্তরীণ সমালোচনা সামলাতে জার্মানির সরকারের তিন শরিক দল সংসদের নিম্ন কক্ষে ইউক্রেনকে ভারি অস্ত্র সরবরাহের নীতি সংক্রান্ত এক প্রস্তাব পেশ করতে চলেছে বলে সংবাদ সংস্থা এএফপি দাবি করেছে৷ সেই প্রস্তাবে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের নীতি চালিয়ে যাওয়া এবং যখনই সম্ভব আরও দ্রুত ভারি ও জটিল সরঞ্জাম পাঠানোর উল্লেখ থাকবে৷ সেইসঙ্গে ইউক্রেনের সৈন্যদের জার্মানিতে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে চায় সরকার৷ বিরোধী ইউনিয়ন শিবির নিজস্ব প্রস্তাব এনে সরকারকে চাপে ফেলার তোড়জোড় করছিল বলে শলৎস নড়েচড়ে বসেছেন, এমন ধারণা জোরালো হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)