1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউক্রেনে শান্তির উদ্যোগে চীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ইউক্রেন যুদ্ধের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চীন যত দ্রুত সম্ভব রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে৷ অন্যদিকে চীন ‘কিলার ড্রোন’ সরবরাহ করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4NvJT
ইরানের শাহিদ ড্রোন৷
ছবিতে ইরানের শাহিদ ড্রোন দেখা যাচ্ছে৷ জার্মান পত্রিকা স্পিগেল বলছে, চীন রাশিয়াকে শাহিদের মতো ড্রোন দিতে পারে৷ছবি: irdiplomacy.ir

এক বছর আগে ইউক্রেনের উপর হামলার শুরু থেকে চীন নিজেকে নিরেপক্ষ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে৷  বার বার শান্তির কথা বললেও বেইজিং এখনো পর্যন্ত হামলার জন্য রাশিয়ার সরাসরি নিন্দা করে নি৷ উলটে পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ করেছে৷ সেইসঙ্গে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহেরও বিরোধিতা করছে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর প্রশাসন৷ তবে চীন এখনো প্রকাশ্যে রাশিয়ার সঙ্গে কোনো সামরিক সহায়তার পথে যায় নি৷ শুধু পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের হুমকির তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে বেইজিং৷

শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউক্রেন সংকটের ‘রাজনৈতিক রফা’ হিসেবে ১২ দফার পরিকল্পনাসহ একটি নথি প্রকাশ করেছে৷ তাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংলাপের লক্ষ্যে সব পক্ষের সমর্থনের অনুরোধ জানানো হয়েছে৷ সেইসঙ্গে বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষের উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার ডাক দিয়েছে চীন৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালাইভান সিএনএন নেটওয়ার্কে বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের উপর হামলা বন্ধ করে সৈন্য প্রত্যাহার করলে আগামীকালই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে৷ অর্থাৎ ১২ দফা পরিকল্পনার বদলে চীন শুধু একটি বিষয় উল্লেখ করলেই পারতো৷ সালাইভানের মতে, সব দেশের সার্বভৌমত্ব মেনে নেবার কথা বলাই যথেষ্ট৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, যে ইউক্রেন, ন্যাটো বা অ্যামেরিকা রাশিয়ার উপর হামলা চালাচ্ছে না৷

গত কয়েক দিনে ইউক্রেন সংকটকে ঘিরে চীনের জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে৷ চীনের শীর্ষ কূটনীতিক মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ও ইউরোপের কয়েকটি রাজধানী সফরের পর মস্কোয় গিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার কথা বলেছেন৷ অন্যদিকে চীন নিজেকে নিরপেক্ষ মধ্যস্থাকারী হিসেবে দাবি করে শান্তির পক্ষে সওয়াল করে চলেছে৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার বলেন, তিনি চীনের তরফ থেকে কোনো শান্তি পরিকল্পনা দেখেন নি৷ বেইজিং-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তিনি তাদের প্রস্তাব সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানানোর আগ্রহ দেখিয়েছেন৷

জার্মানির ‘ডেয়ার স্পিগেল’ পত্রিকার সূত্র অনুযায়ী চীনের এক কোম্পানি রাশিয়াকে ১০০টি কামিকাজি ড্রোন সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে৷ এপ্রিল মাসে সেই ড্রোন হস্তান্তর করা হতে পারে৷ পত্রিকার দাবি, শিয়ান বিংগো ইনটেলিজেন্ট এভিয়েশন টেকনোলজি নামের ড্রোন কোম্পানি তাদের জেড-টি-১৮০ মডেলের ১০০টি প্রোটোটাইপ তৈরি করতে প্রস্তুত৷ সেই ড্রোন নাকি ২৫ থেকে ৫০ কিলো ওজনের অস্ত্র বহন করতে পারে৷ ইরানে তৈরি ‘শাহিদ-১৩৬’ ড্রোনের সঙ্গে সেটির মিল রয়েছে৷ রাশিয়া সেই ড্রোন কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালিয়েছে৷ ‘ডেয়ার স্পিগেল’ আরও জানিয়েছে, যে বিংগো খোদ রাশিয়ায় উৎপাদন কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা করছে৷ উল্লেখ্য, সম্প্রতি অ্যামেরিকা, জার্মানিসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশ রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে চীনকে সতর্ক করে দিয়েছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি চীনের প্রতিনিধিদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে এমন পদক্ষেপ একেবারেই মেনে নেওয়া হবে না৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)