ইউক্রেনে ৩৫০ জনের মৃত্যু, দাবি কিয়েভের
১ মার্চ ২০২২ইউক্রেনে সাধারণ মানুষের উপরেও আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়ার সেনা। সোমবার এমনই দাবি করেছে ইউক্রেনের প্রশাসন। তাদের দাবি, রাশিয়ার হামলায় এখনো পর্যন্ত সাড়ে তিনশ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি শিশু। জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পাঁচ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন। এদিকে সোমবার বেলারুশ সীমান্তে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হলেও সমাধানসূত্রে পৌঁছানো যায়নি।
লড়াই শুরু হওয়ার পর সোমবারই প্রথম মুখোমুখি বসেছিল রাশিয়া এবং ইউক্রেন। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়। শান্তির প্রস্তাব নিয়ে দুই দেশই আলোচনা করে কিন্তু কোনো সমাধানসূত্রে পৌঁছানো যায়নি। দুই দেশই জানিয়েছে, ফের বৈঠকে বসা হবে। তার আগে প্রতিনিধিরা নিজেদের দেশের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে চান। অতি দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিনের বৈঠকে রাশিয়াকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ইউক্রেন।
ইউক্রেন বৈঠকে দাবি করেছে, শুধু সেনা ছাউনি নয়, কিয়েভ-সহ ইউক্রেনের একাধিক শহরে লাগাতার সাধারণ মানুষের এলাকায় হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। এখনো পর্যন্ত ৩৫০ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে শিশুও আছে। বহু মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। রাশিয়া ওই সমস্ত অঞ্চলে লাগাতার শেলিং করছে বলে অভিযোগ।
এদিকে লড়াই ঘিরে আরো জটিল হয়েছে ইউরোপের কূটনীতি। বেলারুশের রাষ্ট্রপ্রধান লুকাশেঙ্কো রাশিয়াকে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। লড়াইয়ের প্রয়োজনে রাশিয়া বেলারুশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু বেলারুশের মানুষ এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে। বেলারুশের জনগণের একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এদিনও তারা লুকাশেঙ্কোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে। ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে সাহায্যও করছেন বেলারুশের জনগণ। সোমবার এবিষয়ে একটি ভিডিওবার্তা পোস্ট করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল। বেলারুশের সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেছেন, যেভাবে তারা প্রতিবাদ করছেন এবং ইউক্রেনের মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তা অভূতপূর্ব। ইইউ তাদের পাশে আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে একাধিক সংস্থা এবং দেশ। ওয়ার্ল্ড ডিসনি জানিয়েছে, তারা রাশিয়ায় আপাতত কোনো ছবি পাঠাবে না। তেল কোম্পানি শেল জানিয়েছে, তারা রাশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে। অ্যামেরিকা নতুন করে আরো বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। রুবেলের দামের রেকর্ড পতন হয়েছে।
অন্যদিকে, অ্যামেরিকায় ফের জরুরি বৈঠকে বসেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে গোটা পরিস্থিতির জন্য কিয়েভকেই দায়ী করেছেন রাশিয়ার প্রতিনিধি। যদিও তার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা হয়েছে বৈঠকে। রাশিয়াকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহারের কথা বলেছে একাধিক দেশ।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)