ইউক্রেনে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে রুশ সেনা প্রত্যাহারের ডাক
১৫ আগস্ট ২০২২ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলারকারণে ধ্বংসলীলা ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর অনেক ঘটনা ঘটছে৷ কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে রাশিয়ার দখল করা এলাকার মধ্যে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু কেন্দ্রে যদি কোনো বিপর্যয় ঘটে, তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব মারাত্মক হতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে৷ রোববারও জাপোরিঝঝায়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে এনেরহোডার শহরে জোরালো সংঘর্ষ ঘটেছে৷
রোববারের সংঘর্যের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনপরস্পরকে দায়ী করেছে৷ রাশিয়ার সূত্র অনুযায়ী ‘ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদীরা' এলাকার উপর হামলা চালিয়েছে৷ অন্যদিকে দিমিত্রো অর্লভ শহরের ইউক্রেনীয় মেয়র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘হত্যাকারী প্ররোচনা'-র অভিযোগ করেছেন৷ রাশিয়া পরমাণু কেন্দ্রটিকে ‘দুর্গ' হিসেবে ব্যবহার করে হামলা চালাচ্ছে বলে ইউক্রেন সমালোচনা করছে৷ অন্যদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সরাসরি পরমাণু কেন্দ্রের উপর হামলার অভিযোগ করছে৷
এই কেন্দ্রের নিরাপত্তার স্বার্থে ৪২টি দেশ অবিলম্বে সেখান থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, নরওয়ে, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও অন্যান্য কয়েকটি দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও আশেপাশের এলাকা থেকে রুশ সৈন্য ও অন্যান্য অননুমোদিত ব্যক্তিদের অপসারণ দাবি করেছে৷ গোটা ইউক্রেন থেকেই রুশ সৈন্য সরানোর দাবিও করেছে এই দেশগুলি৷ সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের পরিচালক সংস্থা ও ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ পরমাণু কেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ আবার গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করতে পারে৷ তাছাড়া আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ সেখানে পরিদর্শন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নিয়মিত নজর রাখতে পারবে৷
রাশিয়ার শুভবুদ্ধির উপর আশ্বাস না রেখে আইএইএ-র বিশেষজ্ঞরাজাপোরিঝঝায়া পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের পরিকল্পনা করছেন৷ তবে জাতিসংঘ, রাশিয়া ও ইউক্রেন সেই সফরের খুঁটিনাটী বিষয়গুলি নিয়ে মতপার্থক্য দূর করতে ব্যর্থ হচ্ছে৷ রুশ কূটনীতিক মিখাইল উলিয়ানভ পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তার স্বার্থে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের ডাক দিয়েছেন৷ তবে সেখানে পৌঁছতে ক্রাইমিয়াসহ রুশ নিয়ন্ত্রিত এলাকার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের ভ্রমণ ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর ঘটনা হবে বলে গোটা বিষয়টি নিয়ে সংশয় রয়েছে৷ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেশ সেখানে ‘ডিমিলিটারাইজড জোন' ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন৷ রাশিয়া অবশ্য সেই দাবি মানতে নারাজ৷
সোমবারও খেরসনসহ ইউক্রেনের দক্ষিণে একাধিক এলাকায় জোরালো সংঘর্যের খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রুশ নিয়ন্ত্রিত একের পর এক এলাকা আবার দখল করে চলেছে বলে কিয়েভ দাবি করছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ/রয়টার্স)