ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের পথে আরো এক ধাপ এগোলো ইউক্রেন
১৭ জুন ২০২২জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস কিয়েভে গিয়ে যখন ইউক্রেনকে ইউরোপেরই অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, তখনই আঁচ পাওয়া গিয়েছিল৷ ফ্রান্স, ইটালি ও রুমেনিয়াও সেই সুরে সুর মিলিয়েছে৷ শুক্রবার দুপুরে ব্রাসেলসে ইইউ কমিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সেই সংশয় দূর করলো৷ ফলে ইউক্রেন ও মলদোভা এবার ইইউ-র সদস্য প্রার্থীর স্বীকৃতি পেতে আগামী সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের অনুমোদন পেলেই সেই স্বীকৃতি চূড়ান্ত হবে৷ পারে৷ ২৩শে জুন তারা সেই স্বীকৃতি দিলেও সেটির রূপরেখা কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, ‘‘ইউক্রেনের মানুষ ইউরোপের অংশ হবার সম্ভাবনার জন্য মৃত্যুবরণ করতেও প্রস্তুত৷ আমরা চাই তারা যেন আমাদের সঙ্গে ইউরোপীয় স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকে৷’’ শুক্রবারের ঘোষণার সময় তিনি ইউক্রেনের পতাকার রং অনুযায়ী হলুদ ব্লেজার ও নীল শার্ট পরে ছিলেন৷ তিনি মনে করিয়ে দেন যে, ইউক্রেন ইতোমধ্যেই ২০১৬ সালের এক চুক্তির পর সে দেশ ইইউ-র প্রায় ৭০ শতাংশ বিধিনিয়ম ও মানদণ্ড কার্যকর করেছে৷ তিনি আরেক প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র জর্জিয়ার প্রার্থীপদ সম্পর্কেও আশা প্রকাশ করেন৷
রাশিয়ার হামলা চলাকালীন ইউক্রেনের জন্য এই স্বীকৃতি বাড়তি প্রতীকী মাত্রা পাচ্ছে৷ হুমকির মুখে মলদোভার জন্যও এই সিদ্ধান্তের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে৷ সে দেশের কিছু অংশে রুশ সেনা মোতায়েন রয়েছে৷ তবে বাস্তবে ইইউ-র সদস্য হতে দুই দেশেরই অনেক বছর সময় লাগবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার এবং দূর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে ইইউর উচ্চ মানদণ্ড পূরণ করা মোটেই সহজ কাজ নয়৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশানালের দূর্নীতিগ্রস্ক দেশের তালিকায় বর্তমানে ইউক্রেনের স্থান ১২২৷ উল্লেখ্য, ইউক্রেনের সঙ্গে ইইউ-র আগেই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চালু ছিল৷ ২০১৪ সালে রুশপন্থি প্রেসিডেন্টের বিদায়ের পরেই সে দেশ ইইউ সদস্য হবার জন্য আবেদন করেছিল৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরো সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া ২০১৮ সাল থেকে কার্যত থমকে রয়েছে৷ ফলে ‘ক্যান্ডিডেট' দেশ হওয়া সত্ত্বেও আলবেনিয়া, নর্থ ম্যাসিডোনিয়া, মন্টেনেগ্রো, সার্বিয়া ও তুরস্ক এই জোটে প্রবেশ করতে পারছে না৷ ইউক্রেন ও মলদোভার ক্ষেত্রে ব্রাসেলস অপেক্ষাকৃত দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলে বাকি দেশগুলিতে ক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি ইইউ কমিশনের সুপারিশ সম্পর্কে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন৷ তার মতে, এই প্রথম পদক্ষেপের মাধ্যমে জয় আরো কাছে চলে আসবে৷ তিনি ইইউ শীর্ষ সম্মেলনেও ইতিবাচক ফলের প্রত্যাশা জানান৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এপি)