ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে যৌন নিপীড়নের শিকার অভিবাসীরা
৩১ মার্চ ২০১৯ইউরোপে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের নিয়ে নতুন এক গবেষণা প্রকাশ করেছে উইমেন্স রিফিউজি কমিশন৷ যারা লিবিয়া হয়ে ইউরোপে পাড়ি জমায় তাদের পরিস্থিতি অনুসন্ধান করাই ছিল গবেষণার মূল লক্ষ্য৷ বর্তমানে এই পথ ধরে আসা অভিবাসীদের ঠেকাতে নতুন নীতি বাস্তবায়ন করছে ইউরোপ৷ তাদের অর্থায়নে লিবিয়ার কোস্ট গার্ড সদস্যরা অভিবাসীদের ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করে দেশটির সরকার পরিচালিত আটক কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিচ্ছে৷ সেখানেও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছে৷
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ে পাচারকারীরা অভিবাসীদের নির্যাতন করে এবং সেই দৃশ্য ধারণ করে রাখে৷ এর আগের আরেক গবেণায় দেখা যায়, উত্তর আফ্রিকা হয়ে আসা অভিবাসী নারীদের প্রায় সবাই তাদের যাত্রাপথে যৌন নীপিড়নের শিকার হয়৷ নতুন গবেষণায় দেখা গেছে পুরুষরাও সেখান থেকে রেহাই পায় না৷
এই পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা অনুমান করাও কষ্টকর৷ একজন মানসিক স্বাস্থ্যকর্মী বলেছেন, সেখানকার গণকবরগুলোতে যত পুরুষ রয়েছে তাদের প্রত্যেকের জননেন্দ্রিয় কাটা ছিল৷ একই বর্ণনা দিয়েছেন এমন পরিস্থিতি থেকে বেঁচে ফিরে আসাদের একজনও৷ গবেষকদের কাছে অভিবাসীরা ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের বিভিন্ন বর্ণনা দিয়েছেন৷
গুপ্ত কারাগারের জন্য লিবিয়ার বানি ওয়ালিদের কুখ্যাতি রয়েছে৷ সেখানে মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর ধরে সূর্যের আলো পৌঁছেনা এমন স্থানে বন্দিদের অর্থের জন্য আটকে রাখা হয়৷ গত বছরের মে মাসে এমন এক বন্দিশালা থেকে শতাধিক অভিবাসী ও শরণার্থী পালানোর চেষ্টা করে৷ অপহরণকারীদের গুলিতে এসময় কমপক্ষে ১৫ জন মারা যায়৷ ৪০ জন শেষ পর্যন্ত পালাতে সক্ষম হয় বলে জানিয়েছে সাহায্যকারী সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার৷ তাদেরকে পরে আবার লিবিয়ার সরকারের একটি আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয়৷
কঠোর নীতির কারণে সমুদ্র পথে আসা শরণার্থীদের ভূমধ্যসাগর দিয়ে এখন ইউরোপে ঢুকতে দেয়া হয় না৷ এজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৪ সাল থেকে লিবিয়াকে ৩৮ কোটি ডলারের বেশি দিয়েছে৷ যার বড় একটি অংশ খরচ হয়েছে দেশটির কোস্ট গার্ডকে শক্তিশালী করা ও আটক কেন্দ্রেগুলোর পেছনে৷
গবেষণা প্রধান সারাজ চিনোয়েথ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, জাতিসংঘ ও সাহায্যকারী সংস্থাগুলো এসব আটক কেন্দ্রে তেমন একটা যেতে পারে না৷ বন্দিরা চাইলেও তাদের অভিযোগ বলার সুযোগ পায় না৷ একটি সরকারি আটক কেন্দ্রে ১৯ বছরের একজন নাইজেরিয়ার বন্দি নারী এক স্বাস্থ্যকর্মীকে জানান, নারীরা সেখানে সব সময় ধর্ষণের হুমকিতে থাকে৷ পুরুষরাও বাদ যায় না৷ ঘুষ দিয়ে অনেক সময় অভিবাসীরা এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পায়৷
এফএস/জেডএইচ (এপি)