1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপেও দুর্বল ম্যার্কেল

২১ জুন ২০১৯

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের প্রচেষ্টা আপাতত চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত মুলতবি রাখা হলো৷ বিষয়টি নিয়ে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে সংঘাত দেখা দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3KorL
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: Reuters/Y. Herman

প্রাক্তন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার একবার প্রশ্ন তুলেছিলেন, ইউরোপের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কাকে টেলিফোন করতে হবে? এই প্রশ্নের কোনো সহজ জবাব না থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিগত কয়েক দশকে ক্ষমতার বণ্টন ও ভারসাম্যের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছে৷ পার্লামেন্ট, কমিশন ও সদস্য দেশের সরকারগুলির পরিষদ এই ক্ষমতা ভাগ করে নেয়৷

সেই ক্ষমতাকেন্দ্রে এখন চলছে রদবদলের পালা৷ গত মাসেই ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ এবার ব্রাসেলসে ইইউ কমিশনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদগুলিতে নতুন মুখ আসতে চলেছে৷ একদিকে সদস্য রাষ্ট্রগুলির সরকার, অন্যদিকে ইইউ পার্লামেন্টের সদস্যদের অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রার্থী এই সব পদে আসতে পারবেন না৷ সাধারণত বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে৷ এবার তার বদলে জোরালো মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে৷ ফলে বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা কোনো অগ্রগতি ছাড়া খালি হাতেই দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন৷ আগামী কয়েক দিনে ঐকমত্য অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে আগামী ৩০শে জুন তাঁরা আবার মিলিত হবেন৷ আগামী ২রা জুলাই নবনির্বাচিত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনের আগেই বিষয়টির নিষ্পত্তি করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷

সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা যাচ্ছে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদকে ঘিরে৷ নতুন নেতাকে ব্রেক্সিট, ইইউ বাজেট, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা ইত্যাদি নানা বিষয়ের নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ তাই জঁ ক্লোদ ইয়ুংকারের মতো বহু ভাষায় পারদর্শী, পোড় খাওয়া রাজনীতিকের বিদায়ের পর কে এই পদে আসীন হবেন, তা নিয়ে বেশ টানাপড়েন চলছে৷ পার্লামেন্ট নির্বাচনে দুর্বল হয়ে পড়লেও রক্ষণশীল শিবির এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখতে পেরেছে৷ তা সত্ত্বেও তাদের প্রার্থী জার্মানির মানফ্রেড ভেবার যথেষ্ট সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বৃহস্পতিবারের পর এ বিষয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে৷ সমালোচকদের মতে, দেশের পর ইউরোপীয় স্তরেও তাঁর নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়ছে৷ সমাজতন্ত্রী ও উদারপন্থি শিবিরের দুই প্রার্থী এখনো প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে প্রস্তুত নন৷

বর্তমান অচলাবস্থার জন্য অনেকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ-কে দায়ী করছেন৷ কারণ তিনি প্রার্থী বাছাইয়ের বর্তমান প্রক্রিয়া বাতিল করতে বদ্ধপরিকর৷ রাজনৈতিক শিবিরগুলির প্রার্থীর বদলে তিনি দক্ষতার ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাইয়ের পক্ষে৷ আগামী ১০ দিনের মধ্যে এমন প্রার্থী খোঁজা সম্ভব হবে বলেও তাঁর বিশ্বাস৷ সরকার বা প্রশাসনে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় মাক্রোঁ মানফ্রেড ভেবার-এর প্রার্থিতার বিরোধিতা করছেন৷ 

ইইউ কমিশন প্রেসিডেন্টের পদ নিয়ে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হলে অন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্যও নাম চূড়ান্ত করতে হবে৷ পররাষ্ট্র বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এবং ইইউ সদস্য দেশের সরকারগুলির পরিষদের প্রধানের পদেও নতুন মুখ আসতে চলেছে৷ সব রাজনৈকিক শিবির ও সরকারের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে তাঁদের নাম চূড়ান্ত হবে৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলে তবেই তাঁরা কার্যভার গ্রহণ করতে পারবেন৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)