ইউরোপের কৃষকেরা কেন বিক্ষোভ করছেন?
বিভিন্ন দাবি আদায়ে গত ১৮ জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভ করছেন ফ্রান্সের কৃষকেরা৷ এর আগে জার্মানি, হল্যান্ড, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি ও বুলগেরিয়ায়ও কৃষক বিক্ষোভ হয়েছে৷
ফ্রান্সে কৃষকদের বিক্ষোভ
গত ১৮ জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভ করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় কৃষিপণ্য উৎপাদনকারক ফ্রান্সের কৃষকেরা৷ ছবিতে ফ্রান্সের পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকদের বিক্ষোভের অংশ হিসেবে এক সেতুতে ট্রাক্টর নিয়ে গিয়ে অবরোধ তৈরি করতে দেখা যাচ্ছে৷
কর সুবিধা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা
ডিজেল ক্রয়ে ফ্রান্সের কৃষকেরা যে কর সুবিধা পেয়ে থাকেন সেটি বাতিলের পরিকল্পনা করছে সরকার৷ এছাড়া কৃষকেরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর অংশ হিসেবে সরকার ও খুচরা বিক্রেতারা দাম কমাতে তাদের উপর চাপ দিচ্ছেন৷ কিন্তু জ্বালানি, সার ও পরিবহণের উচ্চমূল্যের কারণে অনেক কৃষকের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না৷ ছবিতে এক বিক্ষোভকারীর ব্যানারে লেখা ‘মাসে ৪০০ ইউরো, সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা, মাক্রোঁ কৃষিকাজ করতে এসেছেন’৷
কম দামে খাদ্য আমদানি
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেন থেকে খাদ্য আমদানিতে কোটা ও শুল্ক প্রত্যাহার করেছে ইইউ৷ সে কারণে ইউক্রেন থেকে আমদানি করা খাদ্যশস্যের দাম ফ্রান্সের বাজারে কম৷ সেই দামের সাথে পেরে উঠছেন না ফরাসি কৃষকেরা৷ এছাড়া দক্ষিণ অ্যামেরিকার বাণিজ্য ব্লক ‘ম্যার্কোসুয়র’ এর সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও আলোচনা করছে ইইউ৷ তাই চিনি, মাংস ও শস্য খাতে অন্যায্য প্রতিযোগিতার মুখে পড়ার আশঙ্কা ফ্রান্সের কৃষকদের৷
পরিবেশ নীতির কারণে সমস্যা
পরিবেশ রক্ষার কথা বলে কৃষকদের কঠোর নিয়মনীতির মধ্যে ফেলে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ফ্রান্সের কৃষকদের৷ একই মনোভাব ইইউ সাংসদ টোমাস ভাইটসের৷ অস্ট্রিয়ার নাগরিক ভাইটস নিজেও একজন কৃষক৷ তিনি বলেন, ইইউর কৃষকদের যেমন পরিবেশ রক্ষার নীতি মানতে বলা হচ্ছে, তেমনি ইইউর বাইরের যাদের কাছ থেকে আমদানি করা হচ্ছে তারাও যেন এসব নীতি মানেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে৷ ‘‘তা নাহলে ইইউর কৃষকেরা অন্যায্য প্রতিযোগিতায় পড়বেন৷’’
ইইউর অন্য দেশেও বিক্ষোভ
এর আগে জার্মানি, হল্যান্ড, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি ও বুলগেরিয়ায়ও কৃষক বিক্ষোভ হয়েছে৷
চিন্তিত ইইউর শীর্ষ নেতারা
জুন মাসে ইইউর সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তার আগে বিভিন্ন দেশে কৃষকদের এমন বিক্ষোভ ইইউর শীর্ষ নেতাদের ভাবাচ্ছে৷ তাই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার কৃষকদের সংগঠন, এগ্রি-বিজনেস কোম্পানি, এনজিও ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ‘কৌশলগত’ আলোচনা শুরু করেছে ইউরোপীয় কমিশন৷