ইন্টারনেটে সেন্সরশিপ শনাক্ত করবে ‘উনি'
২৩ এপ্রিল ২০২০বিশ্বের সব প্রান্তে ইন্টারনেটে মুক্ত ও অবাধ বিচরণ আজও সম্ভব নয়৷ অনেক অগণতান্ত্রিক সরকার পছন্দ না হলেই ওয়েবসাইট ব্লক করে দেয় অথবা দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কার্যকলাপের উপর নজরদারি চালায়৷ সেই ভয়ে মানুষ নিজের সৃজনশীলতা গোপন রাখেন এবং নিজের প্রকৃত মত প্রকাশ করতে ভয় পান৷
কর্তৃপক্ষের নজর এড়াতে হ্যাকাররা ‘টোর নেটওয়ার্ক' এবং বিশেষ সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করেছেন, যেখানে ব্যবহারকারীরা নিজেদের পরিচয় গোপন করে তথ্য খুঁজতে পারেন৷ সেন্সরশিপ ফাঁকি দিয়ে ব্লক করা ওয়েবসাইট দেখার জন্য ‘সাইফন' বা ভিপিএন পরিষেবাও কাজে লাগানো হয়৷
ইন্টারনেট সেন্সরশিপ ফাঁস করে দেয় ‘উনি'
ইন্টারনেটে সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আসলে অনেকটা চোর-পুলিশ খেলার মতো৷ অনেক সময় সফটওয়্যার ডেভেলপরদের আমাদের মতো ব্যবহারকারীর সহায়তারও প্রয়োজন হয়৷ গত ২১শে এপ্রিল সেই লক্ষ্যে ‘ওপেন অবজারভেটরি অফ নেটওয়ার্ক ইন্টারফেয়ারেন্স' বা ‘ওওএনআই' একটি পরীক্ষামূলক অ্যাপ চালু করেছে৷ এই অ্যাপের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা নানা ধরনের ইন্টেরনেট সেন্সরশিপ শনাক্ত করতে পারেন৷ সেইসঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগের গতি ও মানও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন৷
সেন্সর ফাঁকি এড়ানোর বিষয়ে ডয়চে ভেলের বিশেষজ্ঞ অলিভার লিনো বলেন, ওয়েবসাইট-ব্লকিং শনাক্ত করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য৷ শুধু অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে এতকাল এই অ্যাপ পাওয়া যেতো৷ এবার উইন্ডোস ও ম্যাক ডেস্কটপের জন্যও এটি প্রস্তুত করা হয়েছে৷ ‘উনি' সেন্সরশিপের দৃষ্টান্ত পেলেই প্রকাশ্যে সেই তথ্য তুলে ধরে৷ অবশ্য ব্যবহারকারী সেটা না চাইলে প্রয়োজনীয় সেটিং বদলে দিতে পারে৷
জনমতের চাপ
‘উনি' অ্যাপের প্রস্তুতকারীরা ইন্টারনেট সেন্সরশিপ সম্পর্কে যত বেশি সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করে প্রকাশ্যে তুলে ধরতে চান৷ এভাবে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি হবে বলে তাঁরা আশা করছেন৷ কেউ যদি কোনো ওয়েবসাইট অথবা হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক মেসেঞ্জার বা টেলিগ্রামের মতো যোগাযোগের পথ ব্লক করতে চায়, ‘উনি' তা শনাক্ত করার চেষ্টা করে৷ তাছাড়া টেলিকম কোম্পানি বা সরকার ইন্টারনেটের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে তথাকথিত ‘মিডলবক্স' বসালেও ‘উনি' সেটাও টের পায়৷ কোন কোন ওয়েবসাইট বা পরিষেবা ব্লক করা উটিত, ‘মিডলবক্স'-এর সাহায্যে কর্তৃপক্ষ সেটাও বুঝতে পারে৷
ব্যবহারকারীর সংখ্যার উপর সাফল্য নির্ভর করে
যে কেউ এই অ্যাপ ডাউনলোড করে স্ক্যান চালিয়ে যেতে পারে৷ কম্পিউটার বা স্মার্টফোন থেকে সব সূত্রের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে কিনা, তা পরীক্ষা করা হয়৷ যত বেশি স্বেচ্ছাসেবী এই উদ্যোগে সামিল হবেন, ‘উনি'-র প্রস্তুতকারীরা তত বেশি তথ্য সংগ্রহ করে সমস্যাগুলি তুলে ধরতে পারবেন৷ শুধু তাই নয়, ব্লকিং-এর আশঙ্কা দেখা দিলে কোনো ওয়েবসাইটের মালিকও ‘উনি'-র কাছে ঠিকানা নথিভুক্ত করাতে পারেন৷
তবে ব্যবহারকারীদেরও এই অ্যাপ-এর ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হয়৷ কোনো স্বৈরাচারী সরকার এমন অ্যাপ ব্যবহারের অপরাধে কড়া শাস্তি ও নিপীড়নের বিধান রাখতে পারে৷
ফাবিয়ান স্মিট/এসবি
২০১৭ সালের ছবিঘরটি দেখুন: