ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া স্টাডিজ নিয়ে ডয়চে ভেলে অ্যাকাডেমির মাস্টার্স কোর্স
২৮ নভেম্বর ২০১১চার সেমেস্টারের এই মাস্টার্স প্রোগ্রামটি ডয়চে ভেলে অ্যাকাডেমি আর বন শহরের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি যৌথ উদ্যোগ৷ এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ইউনিভার্সিটি অব বন এবং বন রাইন-সিগ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস৷ বিগত ২০০৮ সাল থেকে এই দুই বছরের মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে৷ মূলত বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া স্টাডিজ কোর্সটি শুরু হয়েছে৷ এই মাস্টার্স কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বাংলাদেশের ফারহানা ফন মিটস্লাভ৷ এই কোর্স সম্পর্কে কীভাবে তিনি জানতে পারলেন সেই প্রশ্ন করেছিলাম তাকে৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ যেহেতু এই প্রোগ্রামটা চালু করা হয়েছে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য তাই তারা এইসব তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গ্যোয়েটে ইন্সটিটিউটে পাঠিয়ে দিয়েছিলো৷ সেখান থেকেই আমি এই মাস্টার্স প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানতে পারি৷ এরপর আমি ডয়চে ভেলের ওয়েবসাইটটি দেখি এবং এই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে পাই৷ সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ডয়চে ভেলে অ্যাকাডেমির ওয়েবসাইটটি নিয়মিত সার্চ করা৷ কারণ সেখানে এই মাস্টার্সের ব্যাপারে সব ধরণের তথ্য বিস্তারিত দেওয়া আছে৷ এখানকার মাস্টার্স প্রোগ্রাম দেখাশোনা করছে প্রফেসর ক্রিস্টফ স্মিট৷ কোন কিছু জানার জন্য তাকে সরাসরি ইমেইল করতে পারে যে কেউ৷''
ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া স্টাডিজ কোর্সে ইংরেজি এবং জার্মান দুটি ভাষাতেই ক্লাস নেওয়া হয়৷ ছাত্রছাত্রীরা চাইলে ইংরেজি কিংবা জার্মান যে কোন ভাষায় পুরো পরীক্ষা দিতে পারে৷ তবে এই কোর্সে জার্মান জানাটা জরুরি বলে জানালেন ফারহানা, ‘‘যেহেতু এটা একটা দ্বিভাষিক প্রোগ্রাম, তাই এখানে আসার জন্য জার্মান জানাটা জরুরি৷ ডয়চে ভেলে অ্যাকাডেমির শর্ত হচ্ছে কমপক্ষে গ্যোয়েটে ইন্সটিটিউটের বি টু পর্যায়ের পরীক্ষা পাশ করতে হবে নয়তো টেস্টডাফ পরীক্ষায় পাশ করতে হবে৷ আর বাংলাদেশ থেকেই এই পরীক্ষা দেওয়া যায়৷ তবে ক্লাস যে পুরোটা জার্মান ভাষায় হয় তা নয়, কখনো কখনো কোর্সের শতকরা ৫০-৫০ কখনো শতকরা ৭০-৩০ ভাগ ইংরেজি ও জার্মান ভাষায় থাকে৷''
বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী এজেন্টদের মাধ্যমে বিদেশে পড়াশোনার চেষ্টা করে৷ সেই ব্যাপারে বাংলাদেশি এই ছাত্রী বললেন, ‘‘এজেন্টদের মাধ্যমে যাওয়ার কোন প্রশ্নই নেই৷ কারণ অনলাইনেই এইখানে পড়াশোনার জন্য আবেদন করা যায় এবং প্রয়োজনীয় যেসব কাগজপত্র রয়েছে সেগুলো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এখানে পাঠাতে পারে৷''
এই কোর্সের প্রায় সব ছাত্রছাত্রীই বিদেশ থেকে এসেছে৷ তাদেরই একজন ব্রাজিল থেকে আসা কারেন সিলভা৷ তিনি বলেন, ‘‘ বিগত ২০০৮ সালে যখন এই কোর্স শুরু হয় তখন আমি আবেদন করেছিলাম৷ গত দুই বছর আমি সাড়া পাইনি৷ এই বৃত্তিটা পাওয়া এত সহজ নয়, কারণ ব্রাজিল থেকে অনেকেই এই বৃত্তির জন্য আবেদন করে৷ এর জন্য ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় পারদর্শী হতে হবে এবং ব্রাজিলে অনেকেই আছে যারা এই দুটি ভাষাতেই কথা বলতে পারে৷''
এখানে এর আগেও পড়াশোনার উদ্দেশ্যে দুইবার এসেছে কারেন সিলভা৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য এই প্রথমবার তিনি জার্মানিতে৷ এই পড়াশোনা সম্পর্কে তার মুল্যায়ন, ‘‘ আমার একটা স্বপ্ন ছিল এখানে পড়াশোনা করার৷ যে প্রত্যাশা নিয়ে আমি এখানে এসেছিলাম তা পূরণ হয়েছে৷ আমার মনে হচ্ছে আমার ব্যাচেলর্স ডিগ্রির চার বছরে আমি যা শিখেছি গত দুই মাসে তার চেয়ে বেশি শিখেছি৷ এখানকার পাঠ্যক্রম অনেক বেশি গভীর, প্রতিদিন আমাদের ক্লাস করতে হয় এবং আমাদের শিক্ষকরা তাদের কাজের প্রতি অনেক বেশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ আমি আমার ক্লাসের বন্ধুদের কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখেছি৷''
সংবাদ মাধ্যমের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান এই দুটি সমন্বয়ে এখানকার পুরো পাঠ্যক্রম সাজানো হয়েছে৷ এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা যেমন বর্তমান আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও বিশ্বায়ন সম্পর্কে নানা তত্ত্ব সম্পর্কে জানতে পারবে তেমনি একজন সংবাদকর্মীর প্রশিক্ষণও হাতেনাতে পাবে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক