ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে শত শত রোহিঙ্গা
সাগরপথে মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে পৌঁছেছেন দুশোর বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী৷ সবমিলিয়ে এক সপ্তাহে সেখানে গিয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ৷
ঝুঁকিপূর্ণ পথে ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গারা
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের একটি সমুদ্রতটে বসে আছেন এক রোহিঙ্গা নারী৷ মিয়ানমার থেকে সাগরপথে সেখানে পৌঁছেছেন তিনি৷ গত কয়েকদিনে তার মতো এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছেন৷
সাগর শান্ত থাকলে শরণার্থী বাড়ে
প্রতিবছর নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস অবধি সাগর তুলনামূলক শান্ত থাকে৷ এই সময়ে মিয়ানমার থেকে দুর্বল নৌকায় করে দেশটিতে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ ছবিতে বুধবার ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানো একদল রোহিঙ্গা শরণার্থীকে দেখা যাচ্ছে৷
অধিকাংশই নারী ও শিশু
আচেহর জেলে সম্প্রদায়ের প্রধান মিফতাক কাট আদেক জানিয়েছেন যে সম্প্রতি তার উপকূলে হাজির হওয়া ২১৬ রোহিঙ্গা শরণার্থীর অধিকাংশ নারী ও শিশু৷ ছোট ছোট নৌকায় করে তারা অনিয়মিত পথে সাগর পাড়ি দিয়ে দেশটিতে পৌঁছান৷
সুনির্দিষ্ট কারণ নেই
ইন্দোনেশিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্র মিত্রা সালিমা সুরিয়নো জানান যে নির্দিষ্ট কোনো কারণে সম্প্রতি অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী সেদেশে পৌঁছাননি৷ সামগ্রিকভাবে নিরাপদ জীবনের আশায় তারা দেশ ছেড়েছেন বলে মনে করেন তিনি৷
কাঠের নৌকায় সাগর পাড়ি
মিয়ানমার থেকে অনিয়মিত পথে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছাতে সাধারণত এরকম কাঠের নৌকা ব্যবহার করেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা৷
স্থানীয়দের বাধা
আচেহর বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা শুরুতে রোহিঙ্গাদের সেখানে ভিড়তে দেননি বলে জানিয়েছেন সুরিয়নো৷ তবে, একপর্যায়ে রোহিঙ্গারা সেখানে নামতে সক্ষম হন৷ ইন্দোনেশিয়া কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে তাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন৷
নিজ দেশে নিপীড়নের শিকার
রোহিঙ্গাদের নিজের দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার৷ বৌদ্ধপ্রধান দেশটিতে তারা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হন৷ একারণে অনেকে মিয়ানমার ছেড়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথে নিরাপদ জীবনের আশায় অন্যত্র চলে যান৷
কোনো দায় আছে বলে মনে করে না ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার কোনো দায় বা ক্ষমতা নেই দেশটির৷ তাদের জন্য কোনো স্থায়ী সমাধানও হতে চায় না দেশটি৷
ভবিষ্যত কী?
নিজ দেশে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ, দশ লাখের বেশি, বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থান করছেন৷ পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন অনেক রোহিঙ্গা৷ মিয়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে আগ্রহী নয়৷