ইরান আল-কায়েদার নতুন ঘাঁটি: পম্পেও
১৩ জানুয়ারি ২০২১ইরান এখন আল-কায়েদার নতুন ডেরা। বিস্ফোরক মন্তব্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর। তাঁর দাবি, এক সময় আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে শেল্টার পেত আল-কায়েদা জঙ্গিরা। গত কয়েক বছর ধরে তাদের শেল্টার দিচ্ছে ইরান। যদিও বক্তব্যের সমর্থনে বিশেষ কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি পম্পেও। তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিশ্বের কূটনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাইক পম্পেও। ট্রাম্পের পররাষ্ট্র সংক্রান্ত সমস্ত পদক্ষেপেই পাশে থেকেছেন তিনি। ট্রাম্পের শাসনের শেষ পর্যায়ে রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ তুললেন তিনি। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করেন পম্পেও। সেখানেই এই গুরুতর অভিযোগ তিনি করেন। তাঁর বক্তব্য, ইরানের প্রশাসন আল-কায়েদা জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে। গত অগাস্টে ইরানে আল-কায়েদার সর্বোচ্চ নেতা আল-মাসরিকে দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ইসরায়েলের গোয়েন্দারা। কিছু দিনের মধ্যেই ইসরায়েল দাবি করে, আল-মাসরিকে ইরানের মাটিতেই হত্যা করা হয়েছে। যদিও আল-মাসরির অবস্থান এবং তাঁর হত্যা দুইটি বিষয়ই নাকচ করে দেয় ইরানের প্রশাসন। রীতিমতো প্রেস বিবৃতি দিয়ে তারা জানায়, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে ওই প্রসঙ্গটিই উত্থাপন করেন পম্পেও। ইসরায়েলের দাবিকে সমর্থন করে তিনি বলেন, এক সময় আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের পাহাড়ে আশ্রয় নিতো আল-কায়েদা জঙ্গিরা। মার্কিন এবং যৌথ বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই হতো। এখন সেখান থেকে তারা চলে এসেছে ইরানে। সেখানে তাদের পাহাড়ে গিয়েও আশ্রয় নিতে হয় না। শহরের মধ্যেই তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয় ইরান প্রশাসন।
শিয়া অধ্যুষিত ইরানের প্রশাসন বরাবরই আল-কায়েদা বিরোধী। প্রকাশ্যেই তারা আল-কায়েদার নিন্দা করেছে। বস্তুত, ওসামা বিন লাদেনও এক সময় বলতেন, ইরানে আল-কায়েদার সদস্য থাকার অর্থ, তারা বন্দি হয়ে গিয়েছে।
কূটনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, পম্পেও যে দাবি করেছেন, তার তথ্যপ্রমাণ নেই। ইরানের উপর চাপ তৈরি করার জন্যই এ কথা তিনি বলেছেন। কোনো কোনো কূটনীতিকের মতে, ইরানে আল-কায়েদা থাকা সহজ বিষয় নয়। ইরানের প্রশাসন তাদের আশ্রয় দিতে পারে না।
ট্রাম্প প্রশাসন প্রথম থেকেই ইরানের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছে। পরমাণু চুক্তি করেও ২০১৮ সালে সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং ইরানের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অদূর অতীতেও বার বার ইরানের সঙ্গে প্রকাশ্য সংঘাতে গেছে অ্যামেরিকা। জো বাইডেন এলে সেই নীতির পরিবর্তন হয় কি না, তা দেখার। কিন্তু তার আগে ট্রাম্প প্রশাসনের লাইনেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের উপর চাপ সৃষ্টির প্রক্রিয়া বজায় রাখলেন বলে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের ধারণা। বস্তুত, এ কাজ করে বাইডেন প্রশাসনকেও পম্পেও একটি বার্তা দিয়ে রাখলেন বলে কোনো কোনো মহল মনে করছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)