ইরান-যুক্তরাষ্ট্র: যতো গর্জে ততো বর্ষে না?
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০অপরদিকে বিশ্বরাজনীতির অপরাপর সমস্যাগুলিও তো মার্কিন প্রেসিডেন্টের মনোযোগের অপেক্ষায়৷ - যাই হোক, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমদিনেজাদের ‘ঘৃণায় ভরা', প্ররোচনামূলক সব মন্তব্যের কথা বলেছেন বারাক ওবামা৷ সাধারণত এরকম কঠিন কথাবার্তা শোনা যায় না তাঁর মুখে৷
কিন্তু মনে রাখতে হবে, আহমদিনেজাদ কোথায় দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলেছেন৷ গ্রাউন্ড জিরোর অতি কাছে দাঁড়িয়ে বিশ্বসমাজের সামনে বলেছেন, নাইন-ইলেভেনের আক্রমণে মার্কিন সরকারের একটা ভূমিকা ছিল৷ যে নাইন-ইলেভেন সম্পর্কে ওবামার মন্তব্য: ঐ ঘটনা এ'প্রজন্মের মার্কিনিদের পক্ষে একটি ‘বৈজিক ট্র্যাজেডি'৷ সেই কারণেই আহমদিনেজাদের বক্তব্য ‘ক্ষমার অযোগ্য'৷
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুনও তো ইরানি নেতার নাম না করেই তাঁর মন্তব্যগুলোর নিন্দা করেছেন৷ - কিন্তু শোনা যাচ্ছে নাকি শুক্রবার ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দু'তরফ থেকেই শোনা গেছে যে, তারা পরমাণু আলাপ-আলোচনার এক নতুন পর্যায় শুরু করতে রাজি৷
মজাটা সেখানেই৷ যেমন রাজনীতির কোনো বিকল্প নেই, সেরকম রাজনীতিতে গোঁসা করলে চলে না৷ তাই আহমদিনেজাদ জানিয়েছেন, এক ইরানি কর্মকর্তা নাকি আগামী মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন এ্যাশটনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন৷ আবার ওবামা বিবিসি'র পার্সী অনুষ্ঠানকে বলেছেন, আন্তরিক আলাপ-আলোচনা শুরু হলে ইরানের উপর জোরদার নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগুলি তুলে নেওয়া হতে পারে৷
মধ্যপ্রাচ্য
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের এই সাধারণ সম্মেলনের অবকাশে শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন আবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে দেখা করেন৷ ক্লিন্টন ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলি, দু'পক্ষের সাথেই জোরদার কথাবার্তা চালাচ্ছেন, কেননা আজ রবিবার নতুন বসতি নির্মাণের উপর ইসরায়েলি স্থগিতাজ্ঞার অবসান ঘটছে৷ তবে ওবামা কেন, বিশ্বের নেতৃবর্গের কেউই মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতকে বিস্মৃত হননি৷ তার প্রমাণ, ওবামা গতকাল নিউ ইয়র্ক থেকেই টেলিফোনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে কথা বলেন৷ তাঁদের কথাবার্তার উপজীব্য ছিল ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সরাসরি আলাপ-আলোচনার প্রতি তাঁদের সমর্থন৷
সুদান নিয়ে ওজনদার বৈঠক
তার কারণ হল, সুদানের গণভোট৷ আগামী জানুয়ারিতে দক্ষিণ সুদানের মানুষরা একটি গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা খার্তুমের জাতীয় ঐক্যের সরকারে থাকবে কি থাকবে না৷ বিপদ হল, গণভোট দক্ষিণ সুদানের বিচ্ছিন্ন হওয়ার দিকেই যেতে পারে৷ ওদিকে আবার দক্ষিণ সুদানই খনিজ তেল সমৃদ্ধ৷ কাজেই পাঁচ বছরের অপেক্ষাকৃত শান্তির পর আবার গৃহযুদ্ধ মাথা চাড়া দিতে পারে৷ কাজেই ওবামা, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নেতা, আফ্রিকান ইউনিয়ন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুদানের ভাইস প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট, সবাই মিলে বসে ঠিক সেই বিপদটাই এড়ানোর পন্থা খুঁজেছেন৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়