1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সেরা ব্লগ’

৯ মে ২০১২

ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতায় এবার সেরা ব্লগ নির্বাচিত হয়েছে ‘উইন্ডো অব ফিয়ার’৷ এই ব্লগটির পেছনের মানুষটি একজন ইরানি, তাঁর নাম আরাস সিগারচি৷ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গিয়ে কারাভোগ করতে হয়েছে তাঁকে৷

https://p.dw.com/p/14s1v
ছবি: privat

আরাস যখন সাংবাদিকতা শুরু করেন তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর৷ ইরানের উত্তরাঞ্চলের গিলান প্রদেশে জন্ম তাঁর৷ একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় কাজ শুরু করেন তিনি৷ একসময় সেই পত্রিকার ‘এডিটর-ইন-চিফ' করা হয় তাঁকে৷ সংবাদ প্রকাশ করতে তখন গিয়ে নানাধরনের বাঁধার মুখে পড়েন তিনি৷ ইরানে অনেক বিষয় নিয়ে লেখা বারন, যেমন সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবরগুলো চেপে যেতে হবে কিংবা নারী অধিকার নিয়ে লিখতে গেলে মানতে হবে অনেক বিধিনিষেধ৷ এসব বিধিনিষেধ মেনে কিছুদিন ব্লগেও সংবাদ প্রকাশ করেছেন তিনি৷ এরপর একসময় ব্লগকে ব্যবহার শুরু করলেন ব্লগ হিসেবেই৷ ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসম্পর্কে আরাস বলেন, ‘‘আপনি জানেন, ইরানে সেন্সরশিপ রয়েছে৷ যখন আমি ব্লগে সংবাদ প্রকাশ করতে শুরু করলাম, তখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আমাকে কিছু সংবাদ সেন্সর করতে বলল৷ তখন আমি সেন্সর করা সংবাদ আমার ব্লগে প্রকাশ করতাম৷ এভাবে কিছুদিন চলার পর আমি আমার ব্লগকে ব্লগ হিসেবেই ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলাম৷ ব্লগ হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি আপনার ধ্যানধারনা, মতামত অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন৷ পরবর্তীতে আমি সেটাই করেছি''৷

Die 11 besten Blogs bei den BOBs 2012
‘উইন্ডো অব ফিয়ার’ছবি: sigarchi.net/blog

কারাবাস

ইরানে আরাস'এর ব্লগ জীবন মোটেই সুখকর ছিল না৷ বরং ইন্টারনেটে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গিয়ে সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি৷ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর৷ কারাবাসকালে ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতা সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতেন তিনি৷ আরাসকে অবশ্য পুরো ১৪ বছর কারাভোগ করতে হয়নি৷ ইরানের নোবেল বিজয়ী শিরিন এবাদি আরাস'এর আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন এবং তাঁর শাস্তি তিন বছরে নামিয়ে এনেছেন৷

অ্যামেরিকায় নির্বাসিত জীবন

জেল থেকে মুক্তির পর আরাস চলে যান অ্যামেরিকায়৷ এখন সেখানে নির্বাসিত জীবন তাঁর, কাজ করেন ভয়েস অব অ্যামেরিকায়৷ আরাস জানালেন, কাজের ফাঁকেই নিজের ব্লগ ‘উইন্ডো অব ফিয়ার'এ বিভিন্ন নিবন্ধ প্রকাশ করেন তিনি৷ বিশেষ করে ইরান থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করেন আরাস৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন আমি ইরান থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের উপর অনুসন্ধান করি৷ যখন ইরানের সুপ্রিম নেতা বা প্রেসিডেন্ট বা অন্য কোন গোষ্ঠী কিছু বলে, আমি সেটা বিশ্লেষণ করি৷ এছাড়া আমি সামাজিক বিষয়ে যেমন নারী অধিকার, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ের দিকেও দৃষ্টিপাত করছি''৷

Arash Sigarchi nominiert bei den BOBs 2012 in der Kategorie Best Blog
ইরানে আরাস'এর ব্লগ জীবন মোটেই সুখকর ছিল না৷ বর্তমানে অ্যামেরিকায় নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন তিনিছবি: privat

আশা, বিস্ময়!

ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতায় তাঁর ব্লগকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, এটা জানতেন আরাস৷ অনলাইন ভোটাভুটির দিকেও নজর ছিল তাঁর৷ মনে মনে ভাবছিলেন, হয়ত জিতবেন এই প্রতিযোগিতায়৷ কিন্তু সত্যিকার অর্থে যখন ‘জুরি অ্যাওয়ার্ড' জয়ের খবর কানে গেল, তখন বিস্মিত তিনি৷ আরাস বলেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছিল, আমাকে নির্বাচন করা হতে পারে৷ কিন্তু আমি এই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম না৷ ফলে বিষয়টি আমাকে চমৎকৃত করেছে৷ আমি গত দশবছর ধরে ব্লগ লিখছি৷ আমি যখন লিখতে শুরু করি, তখন ভাবিনি যে একদিন কেউ একজন বা কোন একটি প্রতিষ্ঠান আমাকে এই লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাবে৷ এটা আমাকে বিস্মিত করেছে''৷

বদলে যাচ্ছে দুনিয়া

আরাস মনে করেন, ইন্টারনেট দুনিয়া ক্রমশ বদলে যাচ্ছে৷ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সামনে এখন অনেক অপশন৷ ব্লগ এবং সামাজিক যোগাযোগের মধ্যে প্রতিযোগিতাও বাড়ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে গেলে পৃথিবী বদলাচ্ছে, ইন্টারনেট বিশ্বও বদলে যাচ্ছে৷ আমি যখন ব্লগ লিখতে শুরু করি, তখন সেটি ছিল একেবারে নতুন প্রযুক্তি৷ কিন্তু এখন সবকিছু বদলে গেছে৷ বিশেষ করে এখন সবাই সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে৷ সুতরাং সামাজিক নেটওয়ার্ক এবং ব্লগের মধ্যে এখন একটি বড় প্রতিযোগিতা চলছে৷ আমার মনে হয়, ব্লগের সংখ্যা কমে যাচ্ছে কিন্তু অন্যদিকে ভালোমানের লেখার সংখ্যা বাড়ছে৷ অনেকে এখন ব্লগ লেখেন এবং তারা চেষ্টা করেন সবচেয়ে ভালোভাবে লিখতে''৷

উল্লেখ্য, বব্স'এর ‘জুরি অ্যাওয়ার্ড' বিজয়ীরা আগামী জুন মাসে বন শহরে অনুষ্ঠিতব্য গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পাবেন৷ এই ফোরামে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য