ইরানে শাহ রেজা পাহলভির কোনো চিহ্ন কি আর আছে?
১৯৭৯ সালে মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি ক্ষমতাচ্যুত হবার পর ইসলামি বিপ্লবীরা শাহ-এর সব চিহ্ন মুছে দেবার চেষ্টা করে৷ কিন্তু অতীতের বেশ কিছু রেশ আজও তেহরানে চোখে পড়বে৷
শুধু পদচিহ্ন নয়, পদযুগল
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর শাহ-এর বহু মূর্তির এই দশা হয়৷ শুধু বুট পরা পা দু’টি রেখে বাকিটা কেটে ফেলা হয়েছে৷ শাহ পাহলভির পিতার স্মৃতিসৌধটিকে একেবারে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়৷
এলাহি বিলাস
ইরানের নতুন শাসকরা তেহরানের উত্তরাঞ্চলে শাহের প্রাসাদগুলিকে যেমন ছিল, প্রায় সেরকমই রেখে দিয়েছেন, কেননা, ব্রোঞ্জের আবক্ষ মূর্তি, সুবিশাল সব হাতে বোনা গালিচা আর সোনাদানা দেখে জনতা বুঝবে, শাহ ও তাঁর মহিষী ফারাহ দিবা ও তঁদের সন্তানরা কতটা বিলাসবহুল জীবন যাপন করতেন৷
অত্যাচারী শাসক
শাহ-এর গোয়েন্দা পুলিশের কারাগারটি আজ একটি মিউজিয়াম৷ এবরাত মিউজিয়ামে প্রদর্শিত দৃশ্যটিতে দেয়ালে শাহ-এর প্রতিকৃতি ঝুলছে, কেননা, ‘সভক’ গোয়েন্দা পুলিশের যাবতীয় অত্যাচার ও নিপীড়ন শাহ-এর নির্দেশে ও শাহ-এর নামেই করা হয়েছে৷ তাঁর আমলে যে দ্বিতীয় কারাগারটিতে বন্দিদের নিপীড়ন করা হতো, সেই এভিন কারাগারটি আজও ব্যবহার করা হচ্ছে৷
পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতীক
তেহরানের কেন্দ্রে লালেজার বুলেভার্ডে শাহ পাহলভির আমলের বহু নাট্যশালা, পানশালা ও গণিকালয় ছিল৷ বিপ্লবের পর পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ এখন সেই সুদৃশ্য রাজপথে ইলেকট্রিক বাতি বিক্রি করা হয়৷
অতীত ক্ষমতার নিদর্শন
শাহ-এর আমলের অপরাপর স্থাপত্য সারিয়ে-গুছিয়ে রাখা হয়েছে, যেমন, দক্ষিণ তেহরানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পথে দরওয়াজদে-ই বাগ-ই মেল্লি নামের এই তোরণটি৷ তোরণের সামনে ইসলামি বিপ্লবের পতাকা উড়লেও, শাহ-এর আমলে নির্মিত তোরণ আজও পাহলভি শাসনের স্মৃতি বহণ করছে৷
রঙ চটলে...
ইসলামি বিপ্লবের পর চটজলদি পতাকাগুলি আঁকা হয় বটে, কিন্তু আজ প্রায় ৪০ বছর পরে সেগুলি ফ্যাকাশে হয়ে নীচের ‘শের ও খুরশিদ’ বা সিংহ ও সূর্য বেরিয়ে পড়ছে, যা কিনা বহু শতাব্দী ধরে পারস্যের নৃপতিদের প্রতীক ছিল৷
স্মৃতিচিহ্ন কেনা যায়
দক্ষিণ তেহরানের বিশাল বাজারটির ব্যাপারীরা ১৯৭৯ সালে শাহ-এর পতনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল, যদিও তারা প্রথাগতভাবে রক্ষণশীল৷ আজ সেই ব্যাপারীরাই শাহ-এর আমলের নানা স্মৃতিচিহ্ন বিক্রি করে থাকে, যদিও তা নিষিদ্ধ৷
ডাকটিকিট
সংগ্রাহকদের কাছে শাহ পরিবারের প্রতিকৃতি আঁকা ডাকটিকিটের বিশেষ কদর৷ নয়া শাসকদের কড়াকড়িতে বিরক্ত অনেক ইরানি আজ শাহ-এর আমলের কথা স্মরণ করেন৷