ইরানে হিজাব পোড়াচ্ছেন মেয়েরা
২১ সেপ্টেম্বর ২০২২হিজাব না পরায় ইরানের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল মাশা আমিনিকে। সেখানেই তার শরীর খারাপ হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপরই ইরান-জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে কুর্দিদের এলাকায়। তবে রাজধানী তেহরান, তার উত্তরের শহর সারি-সহ ইরানের বহু শহরে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।
বিবিসি জানাচ্ছে, মেয়েরা হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সারিতে হিজাব পুড়িয়েছেন মেয়েরা এবং প্রচুর মানুষ হাততালি দিয়ে, চিৎকার করে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইরানের আইন অনুসারে, মেয়েদের হিজাব দিয়ে মাথার চুল ঢাকতেই হবে, হাত ও পাও ঢাকা থাকতে হবে। জনসমক্ষে ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় আগুন জ্বালানো হয়েছে। মেয়েরা এসে সেই আগুনে হিজাব ফেলে দিচ্ছে। জনতা চিৎকার করে তাদের সমর্থন জানাচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবধিকার সংক্রান্ত কার্যকরী হাই কমিশনার নাদা-আল-নাশিফ বলেছেন, পুলিশ আমিনির মাথায় লাঠি দিয়ে মেরেছিল এবং তার মাথা একটি গাড়ির সঙ্গে ঠুকে দিয়েছিল বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। কিন্তু পরিবারের মানুষ বলেছেন, মাশা পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন।
মাশা ছিলেন পশ্চিম ইরানের কুর্দিস্তানের মেয়ে। ঘটনার পরে সেখানে প্রবল বিক্ষোভ হয়। সরকারিভাবে স্বীকার করা হয়েছে, সেখানে তিনজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে সরকারের দাবি, দুইজনকে এমন অস্ত্র দিয়ে মারা হয়েছে, যা পুলিশ-সহ নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে না। তাই তারা বলেছে, ওই দুই জনকে জঙ্গিরা খুন করেছে।
খামেনেইয়ের দূত
মাসা আমিনির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেইয়ের দূত। তিনি মাশার পরিবারকে বলেছেন, সরকারের সব সংস্থা দেখবে য়াতে মানুষের অধিকার না লঙ্ঘিত হয়।
প্রবীণ এমপি রশিদি কোচি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, নীতি পুলিশ অন্যায় করেছে। তারা ইরানের ক্ষতি করেছে।
বিক্ষোভ চলছে
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, উত্তরপশ্চিম ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার রাতে সরকারি মিডিয়াও জানিয়েছে, কিছু শহরে কয়েকটি বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সরকার-বিরোধী স্লোগান দিয়েছে, পুলিশের গাড়িতে পাথর ছুঁড়েছে এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করেছে।
জিএইত/এসজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)