ইরানের সঙ্গে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতির আশা
৮ আগস্ট ২০২২২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজের পরমাণু শক্তি সে দেশের পরমাণু কর্মসূচির অগ্রগতি সীমিত রেখেছিল৷ পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে ইরানকে বিরত রাখতে একাধিক শর্ত চাপানো হয়েছিল এবং সেই প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে সেই চুক্তি থেকে সরে আসার পর ইরানও চুক্তির শর্ত ভেঙে বেপরোয়া পদক্ষেপ নিতে থাকে৷ ওয়াশিংটনে ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের আমলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করায় ইরানও কোনো সদিচ্ছা দেখায় নি৷ সে দেশের দাবি, ওয়াশিংটনকে নিঃশর্তে চুক্তির আওতায় আসতে হবে, সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে এবং ভবিষ্যতে কোনো মার্কিন প্রশাসন এই চুক্তি ত্যাগ করবে না – এমন গ্যারেন্টি দিতে হবে৷
এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানসহ চুক্তির বাকি স্বাক্ষরকারী শক্তিগুলির শীর্ষ প্রতিনিধিরা ভিয়েনায় আবার আলোচনা চালাচ্ছেন৷ রোববার আলোচনার চতুর্থ দিনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মিখাইল উলিয়ানভ বলেন, ‘‘আমরা ফিনিশিং লাইন থেকে পাঁচ মিনিট বা পাঁচ সেকেন্ড দূরে পৌঁছে গেছি৷ শুধু তিন থেকে চারটি বিষয়ের নিষ্পত্তি বাকি আছে৷ সেগুলি বিশেষ করে ইরান ও অ্যামেরিকার জন্য স্পর্শকাতর বিষয়৷'' সাফল্যের গ্যারিন্টি দিতে না পারলেও উলিয়ানভ মনে করেন, আলোচনা সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে৷ আলোচনা দ্রুত শেষ হবে বলেও তিনি মনে করেন৷ রাশিয়ার পূর্ণ সমর্থনেরও আশ্বাস দেন রুশ রাষ্ট্রদূত৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় অ্যামেরিকা ও ইরানের মধ্যে আপোশের নতুন এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে বাকি প্রতিনিধিরা এখনো মুখ খোলেননি৷ চুক্তির স্বাক্ষরকারী হিসেবে রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানিও বর্তমান আলোচনায় অংশ নিচ্ছে৷
রোববার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসেইন আমিরাবদ্দোলাহইয়ান বলেন, তার দেশ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি এজেন্সিআইএইএ-র পরিদর্শকদের তদন্তের বিরোধিতা করছে৷ উল্লেখ্য, অতীতে ইরানের গোপন পরমাণু কার্যকলাপের উপর আলোকপাত করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইএইএ পরিদর্শকদের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাবার আশ্বাস দিলেও তাদের রাজনৈতিক বিচ্যুতি থেকে দুরে থাকতে হবে৷ শুধু প্রযুক্তিগত কাঠামোর আওতায় তাদের কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ রাখার দাবি জানান তিনি৷ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেশের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময়ে আমিরাবদ্দোলাহইয়ান তার দেশের অবস্থান তুলে ধরেন৷ তিনি আবার দাবি করেন, যে ইরান মোটেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চায় না৷
বাইডেন প্রশাসন ইরানের সব দাবি মেনে নেবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে৷ ট্রাম্পের আমলের সিদ্ধান্তের জের ধরে ইরান বেলাগাম হয়ে ঠিক কোন ধরনের কার্যকলাপ চালিয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পেতে চায় ওয়াশিংটন৷ বিশেষ করে পরমাণু সমৃদ্ধিকরণের মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে তেহরান কতটা অগ্রসর হয়েছে, সে বিষয়ে অ্যামেরিকার গভীর দুশ্চিন্তা রয়েছে৷
এসবি/কেএম (এপি/ডিপিএ/এএফপি)