বর্জ্য রিসাইক্লিং
৩০ আগস্ট ২০১৪হামবুর্গ শহরের আউরুবিস কোম্পানির সাইটে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ টন ইলেকট্রনিক বর্জ্য ফেলা হয়৷ সুপারভাইজার সেগুলি পরীক্ষা করে দেখেন৷ কম্পিউটারের এই সব যন্ত্রাংশের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে দামি সব উপাদান৷ কোম্পানির প্রতিনিধি টোরাল্ফ শ্লুৎসকুস বলেন, ‘‘এমন সব পদার্থের জটিল মিশ্রণ বেড়েই চলেছে, কারণ আমাদের সমাজে মোবাইল টেলিফোন ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সংখ্যাও বাড়ছে৷ তাছাড়া এই সব ডিভাইসের আয়ুও অনেক কমে গেছে৷''
আরও ইলেকট্রনিক বর্জ্য পেলে ভালো হতো, কিন্তু সে সব সাধারণ আবর্জনার মধ্যেই ফেলা হয় বা বে-আইনিভাবে রপ্তানি করা হয়৷ এমন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা বড়ই কঠিন৷ এমন আবর্জনার চাহিদা কম নয়৷ এক টনের জন্য কোম্পানিকে কয়েক হাজার ইউরো দিতে হয়৷
আগে চালের ধাতব অংশ বা বাথটব রিসাইক্লিং করা হতো৷ আজ এমন সব ক্ষুদ্র অংশ ব্যবহার করা হচ্ছে, এক নজরে যা চেনাই কঠিন৷ আউরুবিস কোম্পানির আর এক প্রতিনিধি মার্ক লিবার বলেন, ‘‘প্লাগের মধ্য থেকে সোনা ও সোল্ডার করা রুপো বার করতে চাই, যা রিসাইক্লিং করা যায়৷ এছাড়া প্ল্যাটিনাম, প্যালাডিয়াম এবং অবশ্যই তামাও চাই৷ ইলেকট্রনিক বর্জ্যের মধ্যে এ সব থাকে৷''
আউরুবিস কোম্পানি রিসাইক্লিং করে এবং একই সঙ্গে তারা ইউরোপের সবচেয়ে বড় তামা উৎপাদনকারী৷ ১,২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তামা গলানো হয়৷ এক তৃতীয়াংশ আসে ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে, বাকিটা আনা হয় চিলি, ব্রাজিল বা ক্যানাডার খনি থেকে৷ তবে বেশ চড়া দামে সেই কাঁচামাল কিনতে হয়৷
আউরুবিস এই কারখানায় বছরে ৪১ হাজার টন তামা উৎপাদন করে৷ এর বিশাল চাহিদা রয়েছে – বিশেষ করে নির্মাণ ও ইলেকট্রনিক শিল্পে৷ তবে শুধু উঠতি অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশগুলিতেই চাহিদা সীমাবদ্ধ নেই৷ টোরাল্ফ শ্লুৎসকুস বলেন, ‘‘বিশেষ করে জার্মানির মতো শিল্পোন্নত দেশে তামার চাহিদা বিশাল৷ পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির বিকাশ, ইলেকট্রিক লাইনের সম্প্রসারণ, নতুন বায়ুশক্তি প্লান্ট নির্মাণ – সব ক্ষেত্রেই তামার অনেক চাহিদা৷''
তামার রিসাইক্লিং বেশ কঠিন প্রক্রিয়া হলেও কোম্পানি ভবিষ্যতেও এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করে যাবে৷ কারণ রিসাইক্লিং পরিবেশের জন্য ভালো৷ তাছাড়া আউরুবিসকে বিদেশ থেকে তামা আমদানির উপর বেশি নির্ভর করতে হবে না৷