ইসরায়েলে বিশ্বের দীর্ঘতম লবণের গুহা
ইসরায়েলে বিশ্বের দীর্ঘতম লবণের গুহার সন্ধান পেয়েছেন অভিযাত্রীরা৷ ১০ কিলোমিটার জুড়ে যার বিস্তৃতি৷ এর আগের রেকর্ডটি ছিল ইরানের৷
গুহার নাম মালহাম
গুহাটির নাম দেয়া হয়েছে মালহাম৷ ইসরায়েলের দীর্ঘতম পর্বত মাউন্ট সোদমের দক্ষিণ পূর্ব কোণ ঘেঁষে ডেড সি’র কাছাকাছি পর্যন্ত তার বিস্তৃতি৷ গুহার ভেতরে দেয়াল আর ছাদ বেয়ে লবণের আস্তরণ নেমে এসেছে৷
যেভাবে সন্ধান মিলেছে
হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের গুহা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক আমোস ফ্রুমকিন ১৯৮০-র দশকে মালহাম গুহার একটি মানচিত্র তৈরি করেন৷ যেখানে তিনি গুহাটি ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত দেখাতে সক্ষম হন৷ দুই বছর আগে ইসরায়েল ও ইউরোপের গুহা অনুসন্ধানকারী ও গবেষকদের একটি দল পূর্ণ মানচিত্র তৈরির জন্য দশদিন ব্যয় করেন৷ এই বছর আরো দশদিন অনুসন্ধান চালিয়ে গুহাটির ১০ কিলোমিটার বিস্তৃতির সন্ধান পাওয়া গেছে৷
পরিবর্তন হচ্ছে কাঠামো
মাউন্ট সোদমের উপরিভাগে শিলার স্তর থাকলেও তার ভেতরের দিকে রয়েছে লবণের আস্তরণ৷ বৃষ্টির জলধারা শিলা গলে পর্বতটির ভেতরে ঢুকে পড়ে৷ পরে এই স্রোত বয়ে চলে ডেড সি’র দিকে৷ এভাবেই গুহাটির জন্ম৷ তবে এর কাঠামো প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে৷ ফ্রুমকিন প্রথম যেই মানচিত্রটি তৈরি করেছেন সেটি এখন অনেকটা বদলে গেছে এবং সামনেও বদলাতে থাকবে৷
অনন্য আকৃতি
গুহাটির একটি বড় অংশ মরুভূমি থেকে আসা ধুলো দিয়ে ঢাকা৷ ভারি লবণের আস্তরণ, ধুলো আর বিভিন্ন খনিজের উপাদান মিলে গুহাটি অদ্ভুত এক রূপ পেয়েছে৷ সরু পথে হামাগুঁড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলে একটা পর্যায়ে হলরুমের আকারের বিস্তৃত একটি জায়গা মিলবে৷ সেখানে ছাদ থেকে সাদা লবণের বিভিন্ন আকারের কয়েকশ ফলা বেরিয়ে এসেছে, যাকে অনন্য আকৃতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন গবেষকরা৷
রোমাঞ্চকর সুন্দর
ইসরায়েলে গুহা অনুসন্ধানকারী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইয়োয়াভ নেগেভ নতুন করে মালহাম অনুসন্ধানের প্রধান উদ্যোক্তা৷ তিনি বলেন এর আগে কোনো গুহা দশ কিলোমিটারের কাছেও আসতে পারেনি৷ ‘‘এটা ইসরায়েলের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় আর জটিল, আমি যত গুহায় গিয়েছি তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর আর রোমাঞ্চকর,’’ বলছিলেন তিনি৷
ইরানকে পেছনে ফেলে
এর আগে বিশ্বের দীর্ঘতম লবণের গুহা ছিল ইরানের দখলে, যার নাম এন থ্রি৷ ২০০৬ সালে গবেষকরা দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের কেসম দ্বীপের এই গুহাটির মানচিত্র সম্পন্ন করেন, যার বিস্তৃতি ছিল ৬ কিলোমিটার৷ ইরানের কাছ থেকে এই রেকর্ড ছিনিয়ে নেয়াকে তাৎপর্য দিয়ে দেখতে চান না ইয়োয়াভ নেগেভ৷ বলছেন ইরানে অসাধারণ সব গুহা অনুসন্ধানকারী আছেন, যাঁদের সাথে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে৷ তিনি সেখানে ভ্রমণেও যেতে চান৷