ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে হত্যা মামলা
ইসরায়েলের ট্যাঙ্ক হামলায় চারটি মেয়েকে হারিয়েছিলেন ইজেলদিন আবুয়েলাইশ৷ ১২ বছর ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা লড়ছেন ফিলিস্তিনি এই চিকিৎসক৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
যে ব্যথা চিরতরের...
সন্তান হারানোর চেয়ে বড় কষ্ট্ আর কী আছে? ইজেলদিন আবুয়েলাইশ এক রাতেই হারিয়েছেন নিজের তিন কন্যাসহ চারজনকে৷ ২০০৯ সালের ওই সময়টায় তীব্র যুদ্ধ চলছে৷ গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল৷ ডা. ইজেলদিন আবুয়েলাইশ টেলিফোনে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন এক ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলকে৷ ঠিক সেই সময়ে ওপরের তলায় দু-দুটি শেলের আঘাত৷ ‘‘আল্লাহ, আমার মেয়েরা!’’ বলে ছুটে গিয়েছিলেন, কিন্তু কাউকেই বাঁচাতে পারেননি৷
ইসরায়েলে মামলা
নিজের মেয়ে মায়ার (১৫), আয়াহ (১৩) এবং বেসান (২১) আর ভাতিজি নূর (১৫)-এর হত্যার বিচার চেয়ে ইসরায়েলের আদালতে মামলা করেছিলেন ডা. ইজেলদিন আবুয়েলাইশ৷ আদালতের নির্দেশে ঘটনা তদন্ত করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী৷ তদন্ত শেষে তারা দাবি করে, যুদ্ধপরিস্থিতিতে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা পুরোপুরি অনিচ্ছাকৃত৷ আদালত সেই ব্যাখ্যা মেনে নেয়ায় মামলা হেরে যান ইজেলদিন আবুয়েলাইশ৷
লড়াকু পিতা
কিন্তু নিম্ন আদালতের এ রায় মেনে নেননি ইজেলদিন আবুয়েলাইশ৷ ইসরায়েল সরকারের ক্ষমা প্রার্থনা এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করে আপিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টে৷ আদালতে তিন সন্তান এবং আরেক সন্তানতুল্যকে হারানোর ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন নারী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইজেলদিন৷
সুবিচার দাবি
সোমবার নিহত চারজনের ছবি দেখিয়ে আদালতে ডা. ইজেলদিন বলেন, ‘‘আশা করি বিচারকরা সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে থেকে আমার মেয়েদের ও ভাতিজির জন্য সুবিচার পেতে সহায়তা করবেন৷’’ এ সময় বিচারক বলেন, ভীষণ দুঃখজনক এক ঘটনার শিকার ইজেলদিনের প্রতি তিনি পূর্ণ সহানুভূতিশীল৷ আপিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন এখনো জানানো হয়নি৷
‘ডটার্স ফর লাইফ’
২০০৯ সালের ওই সময় ইসরায়েলের এক হাসপাতালে চাকরি করতেন ডা. ইজেলদিন৷ কিন্তু গাজার সেই বাড়িতে আর থাকা হয়নি৷ বাড়ি ছেড়েছেন, দেশও ছেড়েছেন৷ এখন তিনি ক্যানাডা প্রবাসী৷ মেয়েদের স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতে ‘ডটার্স ফর লাইফ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়েছেন৷ মধ্যপ্রাচ্যের মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় সহায়তা করে ‘ডটার্স ফর লাইফ’৷ মামলায় ক্ষতিপূরণ পেলে সেই টাকাও সেবামূলক এই প্রতিষ্ঠানের পেছনেই খরচ করতে চান ডা. ইজেলদিন আবুয়েলাইশ৷