ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘চুরি বৈধ' করার অভিযোগ ফিলিস্তিনের
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭এই আইনের কারণে ইসরায়েল বৈধভাবে ফিলিস্তিনিদের সেই সব ব্যক্তিগত জমির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে, যেখানে ইসরায়েলিরা বসতি নির্মাণ করেছে৷ বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে কিংবা অন্য কোথাও জমি দেয়া হবে৷
সংসদে ভোটাভুটিতে ৬০ জন সাংসদ পক্ষে, আর ৫২ জন আইনের বিপক্ষে ভোট দেন৷
‘প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন' বা পিএলও এক বিবৃতিতে বলেছে, এই আইনের মাধ্যমে ‘জমি চুরির বৈধতা' দেয়া হচ্ছে৷ এছাড়া ইসরায়েল যে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানের সুযোগ নষ্ট করতে চায়, এই আইন পাস সেটি দেখিয়ে দিচ্ছে৷
এদিকে, এই আইন পাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা রাজনীতিক বেজালেল স্মটরিচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচিত করায় যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ধন্যবাদ দিয়েছেন৷ কারণ ‘‘তাঁকে (ট্রাম্প) ছাড়া এই আইন পাস হয়ত সম্ভব ছিল না'' বলে মনে করেন তিনি৷
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য ইসরায়েলের এই আইন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি৷ বার্তা সংস্থা এএফপি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘মন্তব্য করার আগে বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের কথা বলতে হবে৷'' তিনি মনে করছেন, ইসরায়েলের আদালত সংসদে পাস হওয়া এই আইন যাচাই করে দেখতে পারে৷ তখন ট্রাম্প প্রশাসন মন্তব্য করতে পারে বলে জানান ঐ কর্মকর্তা৷
আইন পাস হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগডর লিবারমান বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই আইন বাতিল করে দেয়ার শতভাগ সম্ভাবনা আছে৷
সম্প্রতি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলিদের অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি বসতি থেকে অধিবাসীদের সরিয়ে নেয়ার রায় দিয়েছিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট৷ এই রায়ের পক্ষে কোর্ট যুক্তি দিয়েছিল যে, বসতিটি ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে৷
ইসরায়েল সফররত তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই আইন পাস করায় কঠোর ভাষায় ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন৷
ইসরায়েলে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত মার্টিন ওয়াইজ আইন পাসের খবরটি শেয়ার করে টুইট করেছেন৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ পাস হওয়া আইনের সমালোচনা করে বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্ত থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে পারবে না৷
ইসরায়েলের মানবাধিকার সংস্থা বি'টিসেলেম ইসরায়েলি প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেছে, এই আইন বুঝিয়ে দিলো যে, ফিলিস্তিনিদের জমি চুরি বন্ধ করার কোনো ইচ্ছা ইসরায়েলের নেই৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, এপি)