জার্মানিতে ইহুদিবিরোধী সহিংসতা
১৯ এপ্রিল ২০১৮জার্মানিতে ইহুদিবিদ্বেষ প্রকাশের ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ একটি ভিডিওতে ইসরায়েলের পতাকা পোড়াতে দেখা গিয়েছিল৷ আরেকটিতে দেখা গিয়েছিল এক ইহুদি রেস্তোরাঁ মালিককে অকথ্য গালাগাল করছেন একজন৷ গ্যাস চেম্বারের প্রসঙ্গও উঠে এসেছিল ইহুদিবিদ্বেষী ব্যক্তির বিষোদগারে৷ প্রত্যেকটি ঘটনার পর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ ইহুদিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করার অঙ্গীকার শোনা যায় রাজনীতিবিদদের মুখে৷ ইতিহাসের নজীর, দায়িত্ব ইত্যাদি প্রসঙ্গ তুলে আনেন তাঁরা৷ গঠন করেন নতুন নতুন কমিশন৷ শিক্ষা সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণের কথাও বলেন৷ আলোচনায় এ দেশ যে বহু আগে থেকেই নিজেকে ‘অভিবাসীদের দেশ' হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে এবং এ দেশকে যে অনেক জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়, সে ব্যাপারেও অনেক কথা বলেন তাঁরা৷
ঘৃণা প্রকাশ যেন অধিকার
শুধু বাস্তবসম্মত কিছু কথাই যে এ ধরনের ঘৃণা থামানোর জন্য যথেষ্ট নয় সাম্প্রতিকতম ভিডিওটি তারই প্রমাণ৷ বার্লিনের বুকে দিনের আলোয় এক আরব যুবক কী অনায়াসে কিপা পরা একজনকে পেটালো! নিজের বেল্ট খুলে পেটাতে শুরু করার সময় দেখা গেছে তরুণটির চেহারা শীতল ঘৃণায় পরিপূর্ণ৷ মুখ ঢাকেনি সে৷ সে জানতো, ভিডিও করা হচ্ছে৷ যাকে পেটানো হলো সে কিন্তু মুখের সামনে সেলফোন ধরে বারবার বলেছে, ‘‘আমি ভিডিও করছি, আমি ভিডিও করছি৷''
জার্মানি আসলে কোন পথে যাচ্ছে? এই ভিডিওই প্রমাণ করে যে, খুব শিগগিরই জার্মান সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার নতুন পথ খুঁজে নেয়া দরকার৷ মনে হয়, রেওয়াজমাফিক যে সাজা দেয়া হচ্ছে, তা কাজে আসছে না৷
আমরা এখন কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে তা বোঝার জন্য বরং জার্মানির স্কুলগুলোর দিকে নজর দেয়া যেতে পারে৷ অনেক বাচ্চা যে সবসময় একে-অন্যকে ‘ইহুদি' বলে গালাগাল দেয়, শিক্ষকরা সে বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে আসছেন৷ ব়্যাপ সংগীতের কথাতেও আমরা ইহুদিবিদ্বেষ দেখেছি৷ এ সব কি মেনে নেয়ার মতো?
জার্মানি কি সত্যিই তার মূল্যবোধ, তার স্বাধীনতার জন্য লড়তে চায়? এটা ভাবা ঠিক নয় যে, ধর্ম পরিচয় প্রকাশ পেলেই জার্মানির রাস্তাঘাটে আক্রমণের শিকার হতে হবে আর ইহুদিরা তা মেনে নেবে৷ জার্মানি এমন এক বিন্দুতে এসে দাঁড়িয়েছে যেখান থেকে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সে তার মূল্যবোধ এবং স্বাধীনতার জন্য দ্ব্যর্থহীনভাবে লড়তে চায় কিনা৷
ইনেস পোল/এসিবি
সংবাদভাষ্যটি কেমন লাগলো? জানান নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷