উগ্র ডানপন্থিদের রুখে দিলো ১৫ বছরের বালক
৮ এপ্রিল ২০১৯ঘটনার শুরু ২ এপ্রিল৷ রাজধানী রোমের পাশেই শহরতলী তোরে মাউরায় ৭০ জন রোমাকে আবাসন দেয়ার ঘোষণা দেয় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ৷ এর পর থেকেই এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে উগ্র ডানপন্থিরা৷
আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে কাসাপাউন্ড নামের রাজনৈতিক দল৷ এদিকে, রোমের স্থানীয় সরকার বা সিটি কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণও রয়েছে ফাইভ স্টার মুভমেন্ট (এমফাইভএস) নামের আরেকটি উগ্র ডানপন্থি দলের হাতে৷
২ এপ্রিলই রোমাদের জন্য নির্মিত আবাসন কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয় তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী৷ রাস্তায় পার্ক করে রাখা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুনও ধরিয়ে দেয় তারা৷ এক পর্যায়ে তছনছ করা হয় রোমাদের জন্য পাঠানো খাবারও৷ এসময় ‘ওরা না খেয়ে মরে যাক' বলে শ্লোগান দিতেও দেখা যায় অনেককে৷
বিক্ষোভের মুখে দাবি মেনে নিয়ে বুধবার রোমাদের অন্য এলাকায় সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয় রোম৷
কিন্তু এর পরও থামেনি ডানপন্থিদের বিক্ষোভ৷ এ ঘটনাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় কমতি নেই কাসাপাউন্ড দলের কর্মীদের৷
কিন্তু এমন এক বিক্ষোভ চলাকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অপ্রত্যাশিত এক বাধার মুখোমুখি হতে হয় এক কাসাপাউন্ড নেতার৷ তিনি সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘স্থানীয় জনগণ রোমাদের এই এলাকায় দেখতে চায় না৷' ঠিক তখনই পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা ১৫ বছরের বালক সিমোনে এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান৷ সাংবাদিকরাও তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করে নেন৷
সিমোনে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘‘আমি আপনার সঙ্গে একমত না৷''
তিনি বলেন, ‘‘আপনারা তোরে মাউরায় জনগণের ক্ষোভকে কাজে লাগাচ্ছেন৷ নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর জন্য আপনারা ক্ষোভকে ভোটে রূপান্তরের চেষ্টা করছেন৷''
সিমোনে আরো বলেন, ‘‘সবসময় কিছু হলেই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কথা বলার সঙ্গে আমি একমত নই৷ যখন আপনারা এই অঞ্চলে ইউরোপীয় বিনিয়োগের কথা বলেন, আমি বলি এই ফান্ড সবার জন্য ব্যবহার হোক৷ ইটালিয়ান, রোমা, আফ্রিকান, কাউকেই বঞ্চিত করা উচিত না৷''
তাঁর এই পালটা যুক্তির তোড়ে পুরোটা সময় অস্বস্তিকর মুখভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কাসাপাউন্ড নেতাকে৷
সিমোনের এই সাহসী অবস্থান ও বক্তব্য সংবাদ আকারে প্রকাশ হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও৷ তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে অনলাইনে৷ উগ্র ডানপন্থিদের ‘ভুল বুঝিয়ে ফায়দা নেয়ার' চেষ্টাকে এভাবেই রুখে দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে৷
ইউটিউবে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা পুরো ভিডিও প্রকাশ করেছে ৫ এপ্রিল৷ মাত্র তিন দিনেই আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ দেখেছেন ভিডিওটি৷
এডিকে/জেডএইচ