1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসার জরিপ, উঠছে প্রশ্ন, আশঙ্কাও

১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

উত্তরপ্রদেশে সরকারিভাবে স্বীকৃত নয় এমন মাদ্রাসাগুলি জরিপের সিদ্ধান্ত। শুরু বিতর্ক। আশঙ্কা, মাদ্রাসায় বুলডোজার যাবে না তো!

https://p.dw.com/p/4GobT
উত্তরপ্রদেশের একটি মাদ্রাসা।
উত্তরপ্রদেশের একটি মাদ্রাসা। ছবি: Samiratmaj Mishra/DW

সম্প্রতি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। রাজ্যে সরকারি অনুদান ছাড়া যে সব মাদ্রাসা আছে, তাদের জরিপ হবে। সেখানে জানতে চাওয়া হবে, মাদ্রাসা চালানোর টাকা কোথা থেকে আসে, কী পড়ানো হয় সেখানে, কতজন শিক্ষক আছেন, কারা এই মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত ইত্যাদি। আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে জরিপ শেষ করতে হবে। ২৫ অক্টোবরের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে।

উত্তরপ্রদেশে মোট ১৬ হাজার ৪৬১টি মাদ্রাসা আছে। যার মধ্যে ৫৬০টি মাদ্রাসা সরকারি অনুদান পায়। যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নতুন করে কোনো মাদ্রাসাকে সরকারি অনুদান দেয়া হয়নি।

উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

আসামের ঘটনা

আসামে ইতিমধ্যেই একাধিক মাদ্রাসা বুলডোজার পাঠিয়ে ভেঙে দিয়েছে হিমন্ত বিশ্বশর্মা সরকার। অসমীয়া প্রতিদিনের দিল্লি ব্যুরোর প্রধান আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''সরকার যুক্তি দেখিয়েছে, ওই মাদ্রাসায় বাইরে থেকে মানুষ আসতেন. জেহাদি কাজকারবার হতো। বাংলাদেশ থেকেও সন্দেহজনক মানুষের আনাগোনা ছিল। জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ক্ষতিকারক বলে তা ভেঙে দেয়া হয়েছে।''

এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন উত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্তরা। রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী দানিশ আনসারি বলেছেন, যোগী সরকার গত পাঁচ বছরে কোনো মাদ্রাসায় বুলডোজার পাঠায়নি। ভবিষ্যতেও পাঠাবে না। সরকার মাদ্রাসাগুলিকে মূল ধারায় নিয়ে আসতে চায়। তাই সমীক্ষা হচ্ছে।

প্রবীণ সাংবাদিক ও উত্তরপ্রদেশ বিশেষজ্ঞ শরদ গুপ্তা বলেছেন, ''শুধু মাদ্রাসা কেন, কোনো জায়গায় বিচারবিভাগের অনুমোদন ছাড়া বুলডোজার পাঠানো যায় না। প্রশাসন কোনোভাবে অভিযোগের বিচার করতে পারে না। তার জন্য বিচারবিভাগ আছে।''

এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি বলেছেন, ''সংবিধানের ৩০ অনুচ্ছেদ থেকে পাওয়া অধিকার অনুসারে মাদ্রাসা সঞ্চালিত হয়। রাজ্য সরকার এখন মাদ্রাসার কাজে হস্তক্ষেপ করতে চায়। তাই তারা এই জরিপ করাচ্ছে।''

মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্তদের বক্তব্য

বিজনৌরে মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত শামিম আহমেদ কাজি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''মাদ্রাসায় ইসলামের ধর্মগ্রন্থ, আরবি, ফারসি পড়ানো হয়। সরকার জরিপ করতেই পারে। তবে তাদের মনসা ঠিক হওয়া উচিত।''

জমিয়তের প্রধান মৌলানা আরশাদ মদনি বলেছেন, ''সরকারের সমীক্ষায় কোনো অসুবিধা নেই। সরকার সমীক্ষা করতেই পারে। কিন্তু মাদ্রাসার বিষয়ে সরকার যেন কোনো হস্তক্ষেপ না করে।''

বিতর্কের মূলে

শরদ গুপ্তার মতে, ''শুধু মাদ্রাসাকে আলাদা করে বেছে নেয়া হচ্ছে কেন? সরকার সব বেসরকারি স্কুল নিয়ে সমীক্ষা করুক। কোথা থেকে টাকা আসছে, কতজন শিক্ষক আছে, কত টাকা দিতে হয়, লাভের অর্থ কোথায় যায়, সব দেখুক। কিন্তু একটি সম্প্রদায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন বেছে নেয়া হয়, তখন বিতর্ক হতে বাধ্য।''

আশিসও মনে করেন, ''কোনো মাদ্রাসায় যদি জেহাদিরা থাকে, সেই প্রমাণ যদি সরকারের কাছে থাকে, তখন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক সরকার। তারা সমীক্ষা করতেই পারে। কিন্তু তার থেকে যেন সংখ্যালঘুদের মনে আশঙ্কা তৈরি না হয়।''

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)