1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূমিকম্পের শঙ্কা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৪ জুলাই ২০১৩

উত্তরাখণ্ডে প্রবল বর্ষণ, হড়কা বান আর ভূমিধসে যে প্রলয়কাণ্ড ঘটে গেল, এবার কি তাহলে প্রকৃতির রুদ্ররোষ নেমে আসতে পারে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আকারে? আশঙ্কাটা ঘুরে ফিরে আসছে ভূ-বিজ্ঞানীদের মাথায়৷

https://p.dw.com/p/191gD
Indian workers load wood into a helicopter, to be carried to Kedarnath by the Indian Air Force (IAF) for cremation preparations, at Gauchar Airfield in Uttarakhand state on June 25, 2013. Around 1,000 people have been killed in flash floods and landslides in northern India, as a top official warned June 24, 2013, that rebuilding of the devastated Himalayan region would take years. AFP PHOTO/ MANAN VATSYAYANA (Photo credit should read MANAN VATSYAYANA/AFP/Getty Images)
ছবি: Manan Vatsyayana/AFP/Getty Images

মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়কা বান, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসা বালি, কাঁকর, পাথরের চাঁই, জলাধার ভেঙে জলোচ্ছ্বাসে মাইলের পর মাইল গ্রাম, জনপদ নিশ্চিহ্ন৷ এই প্রলয় কি আটকানো যেত? ভারতের জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার মতে, আটকানো সম্ভব না হলেও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যেত৷

এর প্রেক্ষিতে হিমালয় অঞ্চলে ২০০০ সাল থেকে ভূমিধস নিয়ে গবেষণারত একদল ইউরোপীয় ভূ-বিজ্ঞানীর অভিমত হলো, যেভাবে হিমালয় অঞ্চলের পরিবেশের ভারসাম্য ধ্বংস করা হয়েছে, তাতে এরপর বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছেনা৷ সেক্ষেত্রে পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য উচিত আরো ভালোভাবে তৈরি থাকা৷ বিপর্যয় মোকাবিলা এজেন্সিগুলির বিভিন্ন কাজের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয়সাধন করা – যেটার অভাব এবার দেখা গেছে৷

উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ড রাজ্য ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় পড়ে৷ গত ২৭ জুন মৃদু ভূকম্প হয়৷ তীব্রতা ছিল রিশটার স্কেলে ৩.৫৷ ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি৷ প্রায়ই এই অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়৷ বড় ভূমিকম্প হয় উত্তরকাশীতে ১৯৯১ সালে৷ মারা যায় হাজার খানেক৷ ৯০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ ১৯৯৯ সালে হয় চামোলি জেলায়৷ তীব্রতা ছিল ৬.৮ রিশটার স্কেলে৷ মারা যায় কয়েকশো৷

তাঁদের মতে, সময়ের হিসেবে হিমালয়ের চেয়ে প্রাচীন ইউরোপের আল্পস পর্বতমালা৷ সেদিক থেকে হিমালয় বয়সে এখনো নবীন, ভঙ্গুর, ঠিকমতো শক্ত ও জমাট বাঁধেনি৷ যদিও ভূগঠনের কাজ এখনো শেষ হয়নি৷ ভারতীয় প্লেট এবং উত্তর ইউরো-এশীয় প্লেটের চাপের ফলে শিলাস্তরে ভাঁজ পড়ে হিমালয়ের জন্ম৷ হিমালয় শিলাস্তরের স্থিতিস্থাপকতা কম৷ এটাই হিমালয় পার্বত্য এলাকায় ভূমিধসের মূল কারণ৷ এছাড়া আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তনশীলতা অর্থাৎ অল্প সময়ের মধ্যে ভারি বৃষ্টিপাত৷ এই অতিবৃষ্টির ফলে দেখা দেয় জলোচ্ছ্বাস, বলেন ইউরোপীয় ভূতাত্ত্বিকদল৷৷

গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ বন্যার উৎস৷ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৬০০ মিটার উঁচুতে ১,২০০ বছরের প্রাচীন কেদারনাথ (শিব) মন্দির অবস্থিত মন্দাকিনী নদীর তীরে৷ এই মন্দাকিনীর উৎস যে হিমবাহ, সেই হিমবাহের জলাধার ভেঙে জলস্রোত প্রবলবেগে ধেয়ে আসে৷ তার কিছুক্ষণ আগে পর্বত ঢালের আরেকটা জায়গা দিয়ে নেমে আসে বালি, কাঁকর, পাথর বোল্ডারের বিরাট ধস৷ এই দুটি ধ্বংসপ্রবাহ ভাসিয়ে নিয়ে যায় নীচু বসতি এলাকার সবকিছু৷ কেদারনাথ মন্দির এলাকায় আবহাওয়া বিভাগের কোনো মনিটরিং সিস্টেম ছিলনা, যেটা থাকা দরকার ছিল বলে মনে করেন তাঁরা৷

উপগ্রহ থেকে তোলা ছবির সঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ মিলিয়ে দেখলে আরো নিখুঁতভাবে বলা সম্ভব এই জলোচ্ছ্বাসের কারণ৷ ইউরোপীয় ভূ-বিজ্ঞানীদলের নেতা ডেভ পেটলি মনে করেন, উষ্ণায়ন হিমবাহ গলনের কারণ৷ তবে এক্ষেত্রে সেটা হয়েছে কিনা বলা মুশকিল৷ তাঁর মতে, ভবিষ্যতে এই ধরনের বিপর্যয় এড়াতে পরিবেশের ক্ষতি, বিশেষ করে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে, পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা তৈরির মান উন্নত করতে হবে৷ উপযুক্ত সতর্কীকরণ ব্যবস্থা থাকা ও উদ্ধারকাজের রুট নির্দিষ্ট করা ইত্যাদিও জরুরি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য