১৪ বছর পর বৈঠক
২৫ ডিসেম্বর ২০১৩দুদেশের সীমান্তবর্তী আটারি-ওয়াগার নো-ম্যানস ল্যান্ডে ‘ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশন্স' ডিজিএমও পর্যায়ে এই বৈঠকটি হয়৷ ডিজিএমও পর্যায়ে শেষ বৈঠক হয়েছিল ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের পর৷
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় যোগ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মধ্যে এই বৈঠকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল৷
জম্মু-কাশ্মীরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বারবার গুলিবর্ষণ, অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন, অনুপ্রবেশের ঘটনায় দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে৷ সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাঁচজন ভারতীয় সেনা নিহত হলে সেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়৷ কীভাবে অস্ত্রবিরতি বজায় রেখে উত্তেজনা প্রশমনের একটা মেকানিজম গড়ে তোলা যায় সেটাই ছিল বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয়৷
উভয়পক্ষ একে অপরকে নিজস্ব পথে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উত্তেজনা কম হলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার পথ সুগম হবে৷ পাকিস্তান চেয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিকে দলে শামিল করতে, কিন্তু ভারত তাতে রাজি হয়নি৷ পাকিস্তান চেয়েছিল জাতিসংঘের বৃহত্তর ভূমিকার ওপর জোর দিতে, চেয়েছিল পাঁচজন ভারতীয় সেনা নিহত হবার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক নিয়ন্ত্রণ রেখার দুদিকে মোতায়েন জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষকদের দিয়ে৷ ভারতের পক্ষ থেকে সেই প্রস্তাবও খারিজ করে দেয়া হয়েছে৷
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণের জন্য ১৯৪৯ সালে নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুসারে জাতিসংঘ সামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা হয় কাশ্মীরের দুদিকে৷
জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ডিজিএমও স্তরে বৈঠকের জন্য জোরালো সওয়াল করেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে, যাতে রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় থাকে৷ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সীমান্ত পার থেকে ঘন ঘন গুলিবর্ষণের ফলে নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন গ্রামগুলি থেকে লোকজন প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়৷ অবিলম্বে এটা বন্ধ না হলে আরো গ্রামবাসী পালিয়ে যাবে৷ ভারতের উচিত রক্ষণাত্মক অবস্থান ত্যাগ করে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া৷
পর্যবেক্ষকদের ধারণা ভারত-পাকিস্তানের ইতিহাস বলছে, উত্তেজনা প্রশমনের মেকানিজম কতদিন এবং কতটা কার্যকর থাকবে সেবিষয়ে সংশয় থেকেই যাবে৷
ভারতীয় সামরিক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন লেঃ জেনারেল বিনোদ ভাটিয়া এবং পাকিস্তান সামরিক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল আমির রাজা৷ উভয় দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন একজন ব্রিগেডিয়ার এবং তিনজন লেঃ কর্নেল৷