উন্নয়ন ও হিন্দুত্বের বার্তা নিয়ে মোদীর দিল্লি পদার্পণ
৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩বুধবার দিল্লিতে গুজরাটের তৃতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের আটকে থাকা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন৷ ওঠে নর্মদা নদীর ওপর সর্দার সরোবর বাঁধ প্রকল্প এবং দিল্লি ও মুম্বইয়ের দামে গুজরাটের জন্য গ্যাস সরবরাহের দাবি৷ গ্যাস সরবরাহ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের আইনি লড়াই হলে গুজরাট জিতে যায়৷
গুজরাট নির্বাচনে জয়ের পর আত্মবিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাতারাতি সর্বভারতীয় রাজনীতির এক ওজনদার ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন৷ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে উন্নয়ন, সুশাসনকে মন্ত্র করে আর নিজের জনপ্রিয়তাকে মূলধন করে হিন্দুত্বের পতাকা হাতে আসরে নামার দিন গুনছেন তিনি৷
সেই লক্ষ্যে দিল্লিতে এসে তিনি প্রথমেই যুব সম্প্রদায়কে কাছে টানার চেষ্টা করেন৷ দিল্লির শ্রীরাম কলেজ অফ কমার্সের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীর সামনে রাখলেন উন্নয়ন ও সুশাসনের পথনির্দেশিকা যার ভিত্তিতে তিনি গুজরাটকে সমৃদ্ধ রাজ্যে পরিণত করেছেন৷ বললেন, সব সমস্যার সমাধান হলো উন্নয়ন৷ এর বিকল্প নেই৷ দেশ বরবাদ হয়েছে ভোটব্যাংক রাজনীতির কারণে৷ আসলে দরকার উন্নয়নের রাজনীতি৷ দেশের রাজনীতি যদি উন্নয়নের হাত ধরে চলে, তাহলেই দেশে আসবে পরিবর্তনের জোয়ার৷
তাঁর ভাষণে অন্তঃশীলার মতো ছিল হিন্দুত্ববাদের দর্শন৷ তবে সোচ্চার নয়৷ কট্টরপন্থীর তকমাটা তিনি লঘু করতে চেয়েছেন৷ বললেন, ‘‘আমি আশাবাদী৷ স্বামী বিবেকানন্দ যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা সাকার হবে যুব সমাজের মাধ্যমে৷ ভারত পরিণত হবে এক গ্লোবাল ব্র্যান্ডে৷''
নতুন বাণিজ্য মডেল নিয়ে বক্তব্য রাখতে মোদী শ্রীরাম কলেজ অফ কমার্সে গেলে গেটের বাইরে বামপন্থী ছাত্ররা মোদীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়৷ মোদী সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে৷ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ গুজরাট দাঙ্গার পান্ডা মোদী যেন কলেজের সুস্থ বাতাবরণ কলুষিত না করেন৷
মোদী সমর্থক ছাত্ররা মনে করেন, মোদী অর্থনীতিটা ভালো বোঝেন, দক্ষ প্রশাসক এবং সিদ্ধান্তে অটল৷ তাই গুজরাটের বিকাশ মানচিত্রে ঘটেছে তারই প্রতিফলন৷ মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে বিজেপির মধ্যে চলেছে দ্বন্দ্ব৷ একাংশ মোদীর পক্ষে অন্য অংশ বিশেষ করে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি চাইছে রাম মন্দির আন্দোলনকে ফের জাগিয়ে তুলতে৷ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য চান হিন্দুত্ব ও উন্নয়নের মধ্যে একটা ভারসাম্য রেখে আগামী সাধারণ নির্বাচন লড়তে৷