উপ-রাষ্ট্রপতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সু চি
১৫ নভেম্বর ২০১২ভারত সফরের তৃতীয়দিনে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী এনএলডি দলের চেয়ারপার্সন অং সান সু চি আজ উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির সঙ্গে সাক্ষাতের পর বৈঠকে মিলিত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমান খুরশিদের সঙ্গে৷ স্বাভাবিকভাবেই ওঠে মিয়ানমারের গণতন্ত্রায়ন, রাজনৈতিক ক্ষমতার রুপান্তর, জাতীয় সমঝোতা এবং গণতন্ত্রায়নে ভারতের কাছ থেকে কী ধরণের সহযোগিতা আশা করা যায়, ৯০-এর দশক থেকে যেটা পাওয়া যায়নি৷ বলা বাহুল্য, দু'দেশের ভবিষ্যত সম্পর্ক কীভাবে এগোবে তার একটা দিশা নির্দেশ৷
পর্যবেক্ষকদের মতে, মিয়ানমারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি উভয় সংকটে৷ দু'নৌকায় পা দিয়ে চলতে চাইছে ভারত৷ সে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিলেও সামরিক সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতেও চাইছে না ভারত৷ সেটা অং সান সু চি কথায় স্পষ্ট৷
দিল্লিতে গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণ সংস্থার এক সভায় অং সান সু চি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বহু জনজাতি প্রধান তাঁর দেশে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের রাজনীতি অস্বীকার করা যায় না৷ কোনো বিশেষ জনজাতি প্রধান এলাকায় গ্যাস ও বিদ্যুতের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে, যাতে তারা মনে না করতে পারে যে তাঁরা শোষিত হচ্ছে৷ এটা খুবই সংবেদনশীল প্রশ্ন৷ সেক্ষেত্রে লাভ-ক্ষতি বা ধারাবাহিকতা বড় কথা নয়৷
এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে অং সান সু চি রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রসঙ্গে তাঁর মত ব্যক্ত করে বলেন, মিয়ানমার সরকার মনে করে মুসলিম রোহিঙ্গারা সে দেশের নাগরিক নয়৷ বাংলাদেশ বলছে একই কথা৷ রোহিঙ্গা সম্প্রদায় বাংলাদেশের নাগরিক নয়৷ এটা একটা আন্তর্জাতিক ট্র্যাজিডি৷ তাই তাঁর মতে, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে রোহিঙ্গারা যদি এর আওতায় পড়ে তাহলে তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে পূর্ণ অধিকার দিয়ে৷
অং সান সুচির মতে, সমস্যার আরেকটা দিক হলো, অনেকে মনে করে সীমান্ত ইস্যুতে একটি মাত্র দেশ জড়িত৷ আসলে জড়িত দুটি দেশ, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ৷ এর প্রাথমিক সমাধান, আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা৷ পাশাপাশি বহিরাগত ইস্যুটি খতিয়ে দেখা৷ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটছে কিনা এবং হলে তা বন্ধ করা৷ কারণ বাংলাদেশ বলছে রোহিঙ্গারা আসছে মিয়ানমার থেকে আর মিয়ানমার মনে করে ওরা আসছে বাংলাদেশ থেকে৷ কোনটা ঠিক সেটা যাচাই করবে কে এবং কীভাবে?