উষ্ণতম পাঁচবছরের সতর্কতা জারি
১৮ মে ২০২৩জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত সংস্থার নাম ওয়ার্ল্ড মেটিওরজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডাব্লিউএমও)। বুধবার এক বৈঠকের পর তারা জানিয়েছে, আগামী পাঁচবছর রেকর্ড তাপমাত্রা দেখতে চলেছে বিশ্ব। আবহাওয়ার চরম পরিবর্তন এই সময় দেখা যাবে। এল নিনোর অবস্থান এবং গ্রিন গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ হিসেব করে এই উপসংহারে পৌঁছেছেন তারা।
তারা জানিয়েছে, ৯৮ শতাংশ আশঙ্কা হলো, এই পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো একটি বছরে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছাবে। তবে আগামী পাঁচ বছরে তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমান ভাবে বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হবে বলে জানিয়েছে ডাব্লিউএমও।
পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধি আটকানোর জন্য গত কয়েকটি জলবায়ু সম্মেলনে প্রভূত আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ডাব্লিউএমও জানিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রির উপরে উঠে যেতে পারে।
আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই এল নিনো তৈরির আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। এল নিনো আবহাওয়ার একটি স্বাভাবিক অবস্থান। এল নিনো আবহাওয়া গরম করে, লা নিনা আবহাওয়া ঠান্ডা করে। ডাব্লিউএমও-র বক্তব্য, এল নিনো তৈরি হলেও লা নিনা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তাই তাপমাত্রা বাড়তেই থাকবে। এর প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্য, খাদ্যভাণ্ডার এবং সার্বিকভাবে পরিবেশের উপর। খড়া এবং বন্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। শস্য উৎপাদনে সমস্যা হতে পারে। নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে। সকলে যাতে এর জন্য তৈরি থাকে, সেই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। আগামী ২২ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত আবহাওয়া সংক্রান্ত এক সম্মেলনে এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে ডাব্লিউএমও।
ডাব্লিউএমও জানিয়েছে, তাদের অংক বলছে, ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে তাপমাত্রা গড়ে এক দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। যা রেকর্ড হিসেবে ধরা হবে। এর ফলে মেরু অঞ্চলে তাপমাত্রা তিন গুণ বাড়তে পারে। গত পাঁচটি শীতকালে তাপমাত্রার এই পরিমাণ বৃদ্ধি মেরু অঞ্চল দেখেনি। উত্তর ইউরোপ, আলাস্কা এবং উত্তর সাইবেরিয়ায় প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। অন্যদিকে, অ্যামাজন এবং অস্ট্রেলিয়ায় খড়া হতে পারে।
এর আগে বিশ্বের উষ্ণতম সময় হিসেবে ধরা হতো ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী সময়কে। ২০১৬ সাল সবচেয়ে উষ্ণ ছিল বলে মনে করা হয়। এবার সেই রেকর্ড ভাঙতে চলেছে।
এসজি/জিএইচ (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)